সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া : হাতে আর মাত্র কয়েক'টা দিন। তার পরেই বেজে যাবে পুজোর ঘণ্টা। তাই জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে পুরুলিয়ার (Purulia) দেউলঘাটার দুর্গামন্দিরে (Deulghata Durgamandir)। এই পুজোর রয়েছে বিশাল ঐতিহ্য। এখানকার মন্দিরে পুজো দেখতে ভিড় জমান বহু দর্শনার্থী।
পুরুলিয়ার অন্যতম পর্যটন স্থল দেউলঘাটা মন্দির। এখানেই পূজিত হন প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরানো পাথরের দুর্গামূর্তি। মন্দিরের গায়ে রয়েছে পাথরের ভাস্কর্য ৷ চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জানা অজানা নানান কাহিনি। সাধারণত অন্যান্য দুর্গামূর্তিতে দেবীর বাঁ পা মহিষের উপর থাকে ৷ কিন্তু, এখানকার দুর্গা মূর্তির ক্ষেত্রে তা উল্টো ৷ পাথরের তৈরি এই মূর্তিতে দেবীর ডান পা মহিষের উপর রয়েছে ৷ এখানে নিত্যদিন পুজো হয় দেবীর ৷ তবে, দুর্গাপুজোর সময় আলাদা চেহারা নেয় এই দেউলঘাটা মন্দির। চলে ভাণ্ডারা । প্রকৃতির কোলে মায়ের পুজো দেখতে ভিড় জমান অনেকে।
তবে, এখন আর সেভাবে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ হয় না ৷ ঐতিহ্যই ভাঙাচোরা মন্দিরটির একমাত্র সম্পদ ৷ মন্দিরের সাধিকা তনুশ্রী মুখার্জি তাঁর গুরুদেবের সঙ্গে এই মন্দিরে প্রথম আসেন ৷ তাঁর কাছেই তনুশ্রী শোনেন দুর্গা দেবীর আরাধনার ইতিহাস। বর্তমানে তিনিই এই মন্দিরের যাবতীয় দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন।
দুর্গাপুজোর চারদিন প্রচুর ভিড় হয় দেউলঘাটা মন্দিরে ৷ জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলা এবং ভিন রাজ্য থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন এখানে ৷ শহরের পুজোর মতো তেমন জাঁকজমক না থাকলেও, থাকে ভক্তি ও নিষ্ঠা।
কাশীপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো -
পুরুলিয়া (Purulia) জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন অপর একটি দুর্গাপুজো কাশীপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো (Kashipur Rajbarir Durga Puja)। প্রায় ৪০০ বছরের ইতিহাস-বিজড়িত এই পুজো। অবশ্য অত আগে থেকে শুরু হলেও, ১০৭ বছর আগে কাশীপুর রাজপ্রাসাদ তৈরি করেন রাজা জ্যোতিপ্রসাদ সিংদেও। রাজ প্রাসাদের দক্ষিণ দিকে প্রতিষ্ঠা করা হয় মা দুর্গার প্রতিমা।
আজও রাজবাড়ির দক্ষিণপ্রান্তে হয়ে আসছে মাতৃ আরাধনা। এক সময় বলি প্রথা থাকলেও, প্রায় ২২ বছর আগে রাজবাড়িতে বন্ধ হয়ে যায় এই রীতি। যদিও রাজবাড়ির অল্প দূরে কাশীপুরের দেবী বাড়িতে আজও দুর্গাপুজোর সময় চালু রয়েছে বলি প্রথা। এই পুজো দেখতে আজও সপ্তমী থেকে দশমী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি ভিন্ন রাজ্য থেকেও কাতারে কাতারে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন।