মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ধর্মঘট বিরোধী তারা। কিন্তু শ্রমিকদের দাবিদাওয়ার পক্ষে। এমন দাবি করে এ বার দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার (Durgapur Steel Plant) সামনে বিক্ষোভে শামিল হল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (আইএনটিটিইউসি)। কিন্তু তাদের আন্দোলনের পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলল সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস (সিটু)। শ্রমিক সংগঠনের স্বার্থকে সামনে রেখে আইনটিটিইউসি-র বিরুদ্ধে রাজনীতির করার অভিযোগ তাদের। 


অবসরের পর পেনশন, গ্র্যাচুইটি নিয়ে সম্প্রতি বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা (ডিএসপি) কর্তৃপক্ষ। এত দিন বেতন অনুযায়ী যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা আনলিমিটেড ছিল, তা ২০ লক্ষ টাকায় পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই নিয়ে শ্রমিকরা লাগাতার অভিযোগ জানিয়ে এলেও, কর্তৃপক্ষ কানে তুলছেন না বলে অভিযোগ। নতুন বেতনচুক্তিও কার্যকর করা হয়নি বলে অভিযোগ। 


এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া সামনে রেখে বুধবার ডিএসপি-র মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ দেখায় আইএনটিটিইউসি-র (Indian National Trinamool Trade Union Congress) কর্মী, সমর্থকরা। অবিলম্বে পেনশন, গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত শ্রমিক স্বার্থবিরোধী সমস্ত সার্কুলার প্রত্যাহার করতে হবে বলে দাবি জানান তাঁরা। 
একই সঙ্গে এ দিন আইএনটিটিইউসি-র (INTTUC) সদস্যরা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই ইস্পাত কারখানা নিয়েও বিলগ্নীকরণের পথে হাঁটছে। এতে শ্রমিকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। তৃণমূল কেন্দ্রের এই নীতির বিরুদ্ধে। সংসদে তা পরিষ্কার ভাবে জানিয়েওছেন দলের সাংসদরা।  এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে কেন্দ্রকে। 


আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ডোজে নেওয়ায় অনীহা, ক্যানিংয়ে শুরু হল ‘দুয়ারে টিকা’ পরিষেবা


তবে তৃণমূলের বিক্ষোভের ঢের আগেই বৃহস্পতিবার ডিএসপি-তে ধর্মঘট ডেকেছে সিটু (Centre of Indian Trade Unions)। রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের (RSS) শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজুর সঙ্ঘের (Bharatiya Mazdoor Sangh) জেলা নেতৃত্ব অবশ্য এর বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের দাবি, শ্রমিকদের স্বার্থে আন্দোলন হতেই পারে। কিন্তু তা কখনও ফটক আটকে বা ধর্মঘট করে হওয়া উচিত নয়। শ্রমিকদেরই নিজেদের ভালটা বুঝে নিতে দেওয়া হোক। 


আন্দোলনের বিরোধিতা না করলেও, ধর্মঘট বিরোধী আইএনটিটিইউসি-ও। তাতেই শ্রমিকস্বার্থ সুরক্ষা এখন কার্যত রাজনৈতিক জাঁতাকলে। যারা আন্দোলন সমর্থন করে না, তারা কখনও শ্রমিকস্বার্থের পক্ষে হতে পারে না বলে অভিযোগ সিটুর (CITU)। এই রাজনৈতিক তরজার মধ্যে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন।