কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: ভোর চারটে থেকেই বাড়ির সামনে লম্বা লাইন। একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে জেলার তো বটেই, এমনকী জেলার বাইরে থেকে আসা রোগী ও রোগীর পরিজনরাও অপেক্ষা করছেন আর বাড়ির ভিতরে বসে। আর হাসিমুখে একের পর এক রোগী দেখে চলেছেন ডাক্তারবাবু।
নিজের অত্যন্ত ব্যস্ত রোজনামচার মধ্যেও প্রতিদিনই নিয়ম করে কাকভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীদের দেখেন স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রফেসর ডাক্তার নিতাই প্রামাণিক। তবে তার এই 'ফর্মাল' পরিচয়ে নয়, বরং বর্ধমান সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ তাঁকে চেনে "বিনে পয়সার ডাক্তার" নামেই।
শুধু বাড়ি নয় বাজার দোকান এমনকি কলকাতায় যাওয়ার পথে বাস, ট্রেনেও সমস্যার কথা জানিয়ে ডাক্তারবাবুর কাছে ওষুধ নিয়ে যান হকার থেকে শুরু করে নিত্যাযত্রীরা।
মানুষের সেবাকেই নিজের ধর্ম বলে মেনে চলা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রফেসর নিতাই প্রামাণিকের ডাক্তারি সুনাম কম নয় তা সত্ত্বেও একেবারে সাদামাটা জীবন যাপনেই তিনি অভ্যস্ত। তবে প্রচার নয় বরং নিশ্চুপে কাজ করাতেই তিনি বেশি বিশ্বাসী।
আরও পড়ুন, ইংরেজিতে ২১ পেয়ে আটা কলে কাজ ! আরেক'12th Fail' আজ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার
বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড় থেকে আলমগঞ্জের দিকে কয়েকশো মিটার এগোতেই পিচের রাস্তা থেকে নেমে যাওয়া গলিতে ঢুকলেই চোখে পরবে সবুজ রঙের একটা দোতলা বাড়ি। এখানেই থাকেন স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রফেসর ডাক্তার নিতাই প্রামাণিক। প্রতিদিন নিয়ম করে এখানেই বিনে পয়সায় রোগী দেখেন তিনি। তবে কোনও রোগীর পরিবার পয়সা দিলে তিনি নেন, যদিও কোনও চাহিদা নেই।
শুধু তাই নয় প্রয়োজন মতো রোগীদের হাতে ওষুধের স্যাম্পেল-ফাইলও তুলে দেন। যে কারণে শনি ও রবিবার বাড়ির সামনে তিলধারণেরও জায়গা থাকে না। দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এমনকি হাওড়া থেকেও চিকিৎসার জন্য ভীড় জমান অনেকে। কেউ কেউ তো আবার বাড়ির সামনেই রাত্রিযাপনও করেন।
দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও রোগীর পরিজনেরা জানান, ডাক্তারবাবু আমাদের কাছে ভগবান। তার চিকিৎসায় বহু দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একেবারে প্রচারের আড়ালে থেকে বিনে পয়সায় মানবসেবার ব্রত নিয়ে চলাই লক্ষ্য তাঁর।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে