সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, বিটন চক্রবর্তী ও ভাস্কর ঘোষ পূর্ব মেদিনীপুর: ইউক্রেন দখলে মরিয়া রাশিয়া। মুহূর্মুহূ বোমা পড়ছে। চলছে গোলাবর্ষণ। এই পরিস্থিতিতে রাজধানী কিভ-সহ বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন বাংলার কয়েকশো পড়ুয়া। ভারতীয় দূতাবাসের তরফে যোগাযোগ করা হয়নি বলেও অভিযোগ করছেন তাঁদের অনেকে। উদ্বিগ্ন পরিবার।
বাতাসে বারুদের গন্ধ। বোমার আওয়াজে কেঁপে উঠছে ঘর-বাড়ি। যখন-তখন বেজে উঠছে সাইরেন। কয়েক দিনেই বদলে গিয়েছে চেনা শহরটা। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়েছেন বাংলার কয়েকশো বাসিন্দা। যাঁদের অধিকাংশই মেডিক্যাল পড়ুয়া।
এদেরই একজন আর্য সেন। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থেকে মাত্র ৩ মাস আগে ইউক্রেনে পাড়ি দেন আর্য। খারকিভের একটি মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। যুদ্ধ শুরুর পর আশ্রয় নিয়েছেন কলেজের হস্টেলের নীচে বাঙ্কারে। সঙ্গে রয়েছেন আরও কয়েকজন ভারতীয় পড়ুয়া। হাতে নগদ টাকা নেই। এমনকি ভারতীয় দূতাবাসের তরফেও যোগাযোগ করা হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।
তমলুকের বাড়িতে উদ্বেগে দিন কাটছে পরিবারের। ইউক্রেনে আটকে ডাক্তারি পড়ুয়া অর্ণব মান্না। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান অর্ণবের ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা। ময়নার স্কুলে পড়াশোনা করে ৪ বছর আগে পাড়ি দেন ইউক্রেনে।
হোয়াটসঅ্যাপ কলে ছেলের সঙ্গে কথা হলেও চিন্তায় ঘুম উড়েছে মা-বাবার। ইউক্রেনের টার্নোপিল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া অন্বেষা দাস। বেলুড়ের পিয়ারিমোহন মুখার্জি রোডের বাড়ি থেকে ২০২০-র ডিসেম্বরে ইউক্রেনে পাড়ি দেন।
৮ মার্চ দেশে ফেরার কথা ছিল। আপাতত বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত। পরিবারের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় মেস চালু থাকায় খাবার মিলছে। কবে ফিরবেন দেশে? কীভাবে ফিরবেন? সে সব প্রশ্নের উত্তর এখনও জানা নেই ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলার পড়ুয়াদের।
এদিকে, ইউক্রেনে (ukraine) আটকে পড়া বাঙালি বাসিন্দা ও পড়ুয়াদের জন্য এবার নবান্নে (nabanna) খোলা হল কন্ট্রোল রুম (control room)। নিজের ট্যুইটারে সে কথাই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (mamata banerjee)। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজের ট্যুইটারে এ বিষয়ে লিখেছেন, ''ইউক্রেনে আটকে পড়া ছাত্রসহ রাজ্যের বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য নবান্নে কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের ১৯৯ জনকে দ্রুত নিরাপদে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। এবিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে রাজ্য। শীঘ্রই মুম্বই এবং দিল্লি পৌঁছবেন কিছু ছাত্র। রাজ্য সরকার তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওই ছাত্রদের বিনামূল্যে বিমানের টিকিট দেওয়ার পাশাপাশি, বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য দমদম বিমানবন্দরে রাখা হয়েছে বিশেষ সাহায্যকারী দল।''