বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: বিজেপি করেন তাঁরা। আর তাই সেই খেসারত দিতে হচ্ছে প্রতিপদে। পাঁশকুড়ায় বিজেপি করার অপরাধে জোর করে এক পরিবারের বাড়ির চারদিকে টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করে জুটল মারধর। থানায় অভিযোগ দায়ের পরিবারের। শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর।
বিজেপি সমর্থক পরিবারের জায়গা জোর করে দখল করাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো ধুন্ধুমার পরিস্থিতি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়। বিজেপি সমর্থক সেই পরিবারের বাড়ির চারদিকে টিন দিয়ে ঘিরে তাঁদের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় চৈতন্যপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সরাইঘাট গ্ৰামের তৃনমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েক আগে থেকেই। গ্রামের মধ্যে একটি জায়গায় বাড়ি করে বসবাস করছেন শঙ্কর দোলই ও তাঁর পরিবার। অভিযোগ, সেই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে চাপ দিচ্ছেন ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যা মঙ্গলা দোলই ও তাঁর স্বামী। কিন্তু জায়গা ছাড়তে চাননি শঙ্কর দোলই। এরপরই জল গড়ায় তমলুক আদালত পর্যন্ত। কিন্তু এই জায়গাটি কার তা এখনো মীমাংসা হয়নি। তার আগেই সেই জায়গা থেকে জোর করে ওই পরিবারকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন পঞ্চায়েত সদস্যা মঙ্গলা দোলইয়ের পরিবারের লোকজন। কারও কোনও কথা না শুনেই তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্যা এরপর সেই জায়গায় টিন দিয়ে পুরো বাড়ি ঘিরে দেন। বাধা দিতে যাওয়ায় শঙ্কর দোলইয়ের স্ত্রী সুমিত্রা দোলইকে চড়, কিল, ঘুসি মারার অভিযোগে উঠেছে পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর অনুগামীরদের বিরুদ্ধে। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগকারীনি সুমিত্রা দোলইয়ের বক্তব্য, "দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় বসবাস করছি। গত সোমবার আমাদের ঘর থেকে জোর করে বের করে দেয় পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর অনুগামীরা। এরপর আমাদের পুরো বাড়ির চারিদিক ঘিরে দেয়। বিজেপি করায় আমাদের এইভাবে অত্যাচার করছে। ভোটের সময় বলেছিল ভোটটা তাঁদের দিতে তবেই আমাদের বাড়ি দেবে। এখন এভাবে অত্যাচার করছে।''
তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যা মঙ্গলা দোলই। তিনি বলেন, "ঘটনা যখন ঘটে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। মিথ্যে বলে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে। এটা জমি নিয়ে সমস্যা। এর সাথে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।" পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে ওঠা পুরো অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে শাসক শিবির।
এপ্রসঙ্গে পাঁশকুড়া ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, ''মারধরের ঘটনাটি আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের দলগত ভাবে আলোচনা চলছে যদি পঞ্চায়েত সদস্যা এর সাথে যুক্ত থাকে তবে অবশ্যই শাস্তি পাবেন। আর বিজেপি যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।''