সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির ( Recruitment Scam ) টাকা কোথায় গেছে? কাদের কাছে পৌঁছেছে? কারা লাভবান হয়েছেন? এই দুর্নীতিচক্রের মাথা কে? তদন্তে নেমে এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন তদন্তকারীরা। আবাসন থেকে চলচ্চিত্র জগৎ, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কনসালটেন্সি সার্ভিস এমনকি পুজোর আয়োজন পর্যন্ত, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ঢোকার অভিযোগ সর্বত্র। তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় নানা চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এবার নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattacharya) ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে অভিনব অভিযোগ আনল কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি। এবার তাদের ইডির তদন্তে উঠে এল ক্লাবের নাম।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্য একটি ক্লাবের মাধ্য়মে টাকা লেনদেন করতেন। হাইকোর্টে এমনই বিস্ফোরক দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শুক্রবার, ED-র তরফে হাইকোর্টে দাবি করা হয়, একটি ক্লাবের মাধ্য়মে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন সৌভিক। এছাড়া একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও সরাসরি যোগ রয়েছে মানিক-পুত্রের।
সৌভিক ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করেন, ED-র তথ্য অযৌক্তিক। এ বিষয়ে সোমবার হলফনামা দেবেন তিনি। সেদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।
মানিকের মামলার অগ্রগতি
এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের একটি
স্কুল রয়েছে বলে আদালতে দাবি করে ইডি। পাশাপাশি, এদিনও তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় ইডি-কে। প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) গ্রেফতার হওয়া এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার হওয়ার পর পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় সামনে এসেছিল বিশাল বাবলি চট্টোপাধ্যায় মেমোরিয়াল স্কুলের ছবি। ইডি চার্জশিটে আগেই দাবি করেছে, চাকরি বিক্রির কালো টাকা বিনিয়োগ হয়েছিল পিংলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াত স্ত্রীর নামাঙ্কিত স্কুল তৈরিতে। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার হাইকোর্টে ইডি দাবি করে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো মানিক ভট্টাচার্যেরও একটি স্কুল রয়েছে। মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী বলেন, যে স্কুলের কথা ইডি বলছে, সেটা ১০০ বছরের পুরনো একটি সরকারি স্কুল। কিন্তু সেই স্কুলের সঙ্গে এই নিয়োগ দুর্নীতির কী সম্পর্ক, তা নিয়ে কিছু জানায়নি ইডি। এদিন শুনানি চলাকালীন, মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী আবেদন করেন, শুনানির সময় মানিক ভট্টাচার্যকে এজলাসে থাকার অনুমতি দেওয়া হোক। বিচারপতি বলেন, সেই আবেদন খারিজ করে জানান, প্রয়োজন হলে আদালত ডেকে পাঠাবে। এরপরই শুনানির জন্য আরও তিন সপ্তাহ সময় চায় ইডি।