কলকাতা : শহরজুড়ে ফের সক্রিয় ইডি। এবার রেশন দুর্নীতির তদন্তে কলকাতায় জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল ইডি টিম। এবার হানা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠর বাড়িতে। সাত সকালেই বেরিয়ে পড়ে তদন্তকারী সংস্থার আধইকারিকরা। রকরক হানা দেন রাজারহাট ও উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় ।
সূত্রের খবর, রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় অভিযানে নেমেছে ইডি। রাতেই সিজিও কমপ্লেক্স থেকে অভিযানে বেরোয় ইডি-র বিভিন্ন টিম । সকাল থেকে ১০ জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন আধিকারিকরা। বসিরহাটে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বারিক বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে ইডি-দল।
রাজারহাটে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বারিক বিশ্বাসের ফ্ল্যাটে হানা দেয় ইডি। সন্দেশখালির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়েই অভিযানে নেমেছে ইডি। জানা গিয়েছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ীর একাধিক রাইস মিল রয়েছে। তাতেই হানা দিয়েছে ইডি।
এরই মধ্যে রেশন দুর্নীতির তদন্তে বাতিল রেশন কার্ডের উপর নজর রেখেছে ইডি। ২০১৮-১৯ সালের পর ভুরি ভুরি রেশন কার্ড বাতিল করা হয়। খাদ্য দফতরের পাঠানো সেই সংক্রান্ত ২২০০ পাতার নথিকে হাতিয়ার করে তদন্ত করছে ইডি। হঠাৎ কেন এত রেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছিল? ভুয়ো রেশন কার্ডের মাধ্যমেই কি বছরের পর বছর দুর্নীতি হয়েছে? উত্তর খুঁজতে ৩ জনের টিম তৈরি করেছে ইডি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে জেলে রয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান,
বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান ও তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য, সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। তাছাড়াও অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
গত অক্টোবরে রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার প্রাক্তন খাদ্য়মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হন । জোড়া বাড়িতে ২০ ঘণ্টার ম্য়ারাথন তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এরপর থেকে একের পর এক গ্রেফতারি হয়েছে রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে।
গত ৫ই জানুয়ারি, রেশন দুর্নীতির তদন্তে, সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয় ED-র আধিকারিকদের। ভাঙচুর করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়ি। কার্যত তাড়া করে মারতে মারতে, এলাকা ছাড়া করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সশস্ত্র জওয়ানদের! কোনওরকমে প্রাণ হাতে করে বেঁচে ফেরেন ইডির আধিকারিকরা। এরপর, ৫৫ দিন অন্তরালে থাকার পর, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য় পুলিশ। সম্প্রতি, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে চার্জশিটে ED দাবি করেছে, নকল সংস্থার মাধ্য়মে সরকারি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন শেখ শাহজাহান। একাধিক ভুয়ো সংস্থা তৈরি করেছিলেন তিনি। সেই ভুয়ো সংস্থাকে তিনিই সরকারি কাজ পাইয়ে দিতেন। ঠিকাদার নয়, এমন ব্যক্তিকে ঠিকাদারের সাজিয়ে সরকারি কাজের বরাত আদায় করতেন। এইভাবে কোটি কোটি সরকারি প্রকল্পের টাকা ঘুরপথে আসত শেখ শাহজাহানের কাছে।