প্রকাশ সিনহা, সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ' ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৮২০ ও ১৯৫২-র ৬ অক্টোবর, এই দু'দিনে বাংলায় দুই মহান ব্যক্তি জন্ম নিয়েছেন। একজন শিক্ষার আলো এনেছেন। আরেকজন এডুকেশন সিস্টেমকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। ' প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর  ( Former Education Minister ) জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে এমনই সওয়াল করল ইডি ( ED ) । মঙ্গলবার আদালত ফের পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ( Partha Chatterjee )  জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয় । নিয়োগ মামলায় জেলেই কাটাতে হবে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে। আর্থিক দুর্নীতিতে  যুক্ত থাকার প্রমাণ আছে কেস ডায়েরিতে, জানায়  আদালত।    

এদিন আদালতে সওয়াল জবাবে একদিকে যেমন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্য়াসাগরের নাম উঠে আসে, তেমন ইডি দাবি করে কীভাবে গ্রেফতারির সময় পার্থ নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পর্কে জাহির করেছিলেন ইডিকর্তাদের কাছে । পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় নাকি নিজের  প্রভাব বোঝাতে গিয়ে, গ্রেফতারির সময় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ( Mamata Banerjee )  সম্পর্কে একটি মন্তব্য়ও  করেন।  কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, পার্থ নাকি বলেনছিলেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ কাছের। 


আদালতে দাঁড়িয়ে ইডির আইনজীবী দাবি করেন, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় এতটাই প্রভাবশালী যে, গ্রেফতারির সময় ইডি'র কাছে নিজেকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের nearest ও dearest বলে দাবি করেছিলেন। এমনকী, নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে ইডির আধিকারিকদের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন! পার্থর গ্রেফতারির সময়ও ED সূত্রে দাবি করা হয়েছিল,  গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কার সঙ্গে কথা বলতে চান? উত্তরে তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান। ED সূত্রে দাবি, চারবার তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেকথা অ্য়ারেস্ট মেমোতেও উল্লেখ করে ইডি। পার্থও একবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, গ্রেফতারির সময় নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পাননি। 


সেই সঙ্গে মঙ্গলবার পার্থর জামিনের বিরোধিতা করে ED'র আইনজীবী বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় প্রভাবশালী নন?  তিনি এতটাই প্রভাবশালী যে, ইডির আধিকারিকদের মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে হুমকি দিয়েছিলেন।  জামিন খারিজের অর্ডারের কপিতেও পার্থ চট্টোপাধ্য়াকে অত্য়ন্ত প্রভাবশালী বলা হয়েছে। 


এদিন একই সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের জামিন ও ED'র মামলা থেকে অব্য়াহতির শুনানি ছিল। ইডি-র চার্জশিট খারিজেরও আবেদন জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডি-র আইনজীবী দাবি করেন, এক্ষেত্রে আদালতের সময় নষ্ট করায়, পার্থকে জরিমানা করা হোক। এরপরই ED'র মামলা থেকে অব্য়াহতির আবেদন প্রত্য়াহার করেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের আইনজীবী। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।