সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ৮ বছরেও মেলেনি পরীক্ষার ফল, পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের জরিমানা। ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলবন্দি মানিককে জরিমানার টাকা দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের।  ২০১৪-র টেটের কী ফল? জানতে না পেরে হাইকোর্টে মামলা করেন মালারানি পাল। 


ফল জানতে না পেরে ২০১৬, ২০২০-র ২টি পরীক্ষায় বসতে না পারার অভিযোগ পরীক্ষার্থীর। হাইকোর্টের নির্দেশ, 'পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট জানার অধিকার আছে পরীক্ষার্থীর। প্রাথমিক পর্ষদের শীর্ষ পদে এমন একজন ছিলেন, তাঁর জন্যেই এই পরিস্থিতি'
জেলেই মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতের নির্দেশের কপি দেবেন আইনজীবী। ৩০ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে ফের মামলার শুনানি।


কত টাকা জরিমানা:
৮ বছরেও পরীক্ষার ফল জানায়নি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ১৫ দিনের মধ্যে অর্থদণ্ডের টাকা দিতে হবে মানিককে।


কী অভিযোগ:
২০১৪ সালের টেটে অংশ নেন মালারানী পাল। কিন্তু ওই পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন কি না, পর্ষদ তা জানায়নি বলে অভিযোগ। মামলকারীর বক্তব্য, টেটের ফল জানতে না পারায় ২০১৬ এবং ২০২০ সালের দু'টি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। এর ফলে তিনি বঞ্চিত হয়েছেন। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা দিয়ে ফল জানার অধিকার প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর রয়েছে। কিন্তু পর্ষদের শীর্ষ পদে এমন এক ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর পরই মানিককে জরিমানা করে আদালত। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, এখন মানিক যে হেতু জেলে রয়েছেন, তাই সেখানে হাই কোর্টের কপি নিয়ে যাবেন মামলকারীর আইনজীবী। 

আগে যা হয়েছে:
সিবিআইয়ের তলব: চলতি বছর জুন মাসে, ২০১৪’র প্রাথমিক টেট মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের মুখোমুখি হতে হবে তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচীকে। সেই মতো নির্ধারিত সময়ের আগে সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসের দফতরে পৌঁছে যান দু’জনে। অভিযোগ, ২০১৪’র টেটে দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকায় থাকা ২৬৯ জনকে বেআইনিভাবে বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, এই দু’জনের থেকে তদন্তকারীরা জানতে চান, কার নির্দেশে ২০১৪’র টেটে দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, শুধু ২৬৯ জনকেই কেন ১ নম্বর করে বাড়ানো হল ? নম্বর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিল ? সরকারি ফাইলে তার কোনও তথ্য আছে কি না। ২০ জুন মানিক ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তারপর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মানিক। পর লুক আউট নোটিসও জারি হয় তাঁর নামে। ১১ অক্টোবর  নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় গ্রেফতার করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya)। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি (Enforcement Directorate)।


আরও পড়ুন: 'বিড়ি শ্রমিকের মাইনে কি ব্যাঙ্কে দেবে?' জাকির-ঘরে আয়কর হানা, তীব্র সমালোচনা মমতার