সন্দীপ সরকার, অর্ণব মুখোপাধ্য়ায় ও বিজেন্দ্র সিংহ, দত্তপুকুর: নিষিদ্ধ বাজিতে (Illigal Fire Cracker) ঠাসা একের পর এক বস্তা! সেই বস্তার কোনওটার গায়েই FCI, কোনওটার গায়ে পাঞ্জাব (Panjab) সরকারের ছাপ! কোনওটায় আবার কর্ণাটকের (Karnataka) চিনি কলের নাম লেখা! পুলিশকে ধোঁকা দিতে কি সরকারি ছাপ দেওয়া বস্তায় ভরে চলত বাজি পাচার? উঠছে সেই প্রশ্ন। কিন্তু বিস্ফোরণকাণ্ডের পর তিনদিন কেটে গেলেও বাজেয়াপ্ত বা নিষ্ক্রিয় করা হয়নি বাজিগুলি। 


এক ঝলক দেখলে মনে হবে, খাদ্য়শস্য়ের বস্তা। যার মধ্য়ে ঠাসা রয়েছে প্রচুর খাদ্য়সামগ্রী। বস্তার ওপর FCI অর্থাৎ, ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার ছাপ। বস্তার গায়ে লেখা গর্ভনমেন্ট অফ পাঞ্জাব। আবার, কোনওটির গায়ে কর্নাটকের সুগার মিলের নাম-ঠিকানা লেখা।  কিন্তু, এর পুরোটাই ভেক! কোনও বস্তার মধ্য়েই কোনও চাল ডাল কিংবা চিনি নেই!আছে প্রচুর প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি। 


নিষিদ্ধ শব্দবাজির গোডাউন: উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার মোচপোলে, বিস্ফোরণস্থল থেকে ১০-১৫ মিটার দূরে, খোঁজ মিলেছে এমনই নিষিদ্ধ শব্দবাজির গোডাউনের! যেখানে, শাটার টানা এমন একাধিক দোকানঘরের মধ্য়ে থরে থরে সাজানো রয়েছে অজস্র বাজির বস্তা। প্রশাসনের চোখে ধুলো দিতেই, বস্তার গায়ে এভাবে দেগে দেওয়া হত সরকারি ছাপ! আর সরকারি চিহ্ন গায়ে লাগিয়ে এভাবেই পাচার হয়ে যেত নিষিদ্ধ বাজি!


ভিন রাজ্য়ে পাচার হতে যেত নিষিদ্ধ শব্দবাজি?  এরকমই আরেকটি বস্তার গায়ে কর্ণাটকের একটি সুগার মিলের নাম-ঠিকানা লেখা। শুধু কি গর্ভনমেন্ট অফ পাঞ্জাব কিম্বা কর্ণাটকের মিলের নাম লেখা বস্তা? পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি এড়াতে নেওয়া হত আরও অনেক পন্থা। যেমন, এই বস্তাটি। যার গায়ে লেখা ভারতীয় টি বোর্ড। রয়েছে চিহ্নও। অর্থাৎ, সরকারি নাম, চিহ্নকে হাতিয়ার করেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে রাজ্য়ের অন্য়ত্র কিম্বা ভিন রাজ্য়ে পাচার হতে যেত নিষিদ্ধ শব্দবাজি? 


কোথায় প্রশাসন? রবিবারের ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের পর, কেটে গেছে ৩-৩টে দিন। কিন্তু এখনও এলাকায় এইভাবে সাজানো রয়েছে নিষিদ্ধ বাজির বস্তা! নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের কাছে সত্য়িই কি এ নিয়ে কোনও তথ্য় নেই? সত্য়িই কি ভয়ঙ্কর এই ব্য়বসার সম্পর্কে কিছুই জানত না প্রশাসন? বারুদে বেসামাল পরিস্থিতি, আর পুলিশ কি চোখ বুজে ছিল? একে অবৈধ ব্য়বসা! আইনে বুড়ো আঙুল দেখানো! বারুদ নিয়ে ছেলেখেলা! প্রাণের ঝুঁকি। অবৈধ কারবারিদের, তার সঙ্গে আশপাশে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের! কিন্তু কোথায় প্রশাসন?


পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলছেন, একটা বাজির ওপর একটা বাজি দেখা যায় না তার ফলে নিচের বাজির ওপর প্রেসার হয় এর জন্য racking করতে হয়। যেখানে বাজি তৈরি হচ্ছিল সেখানে বিভিন্ন শেড থাকার কথা বলা আছে সেরকম কোনো বিভাগ ওখানে ছিল না। এটা অবৈধ। পটাশিয়াম ক্লোরেট বস্তায় করে রেখে দিলাম কিন্তু রাত্রে বৃষ্টি হয়ে জল লেগে গেলে বিস্ফোরণ হবে।