অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা :'সুজন চক্রবর্তী, বিকাশরঞ্জ ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষরা ব্যক্তিগতভাবে জানেন আমায়। রাজনীতি ছেড়ে বলুন, আমি চোর?' রবিবার বাড়িতে সিবিআই ( CBI ) হানার পর এমনই মন্তব্য করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম ( Firhad Hakim ) । তার উত্তরে বর্তমান মেয়র সম্পর্কে কী বললেন প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন? কীই বা বললেন,  বিজেপি সাংসদ দিলীপ?


'আমি প্রশ্ন করতে চাই, আমি কি চোর?...জীবনে কোনওদিন কোনও অনৈতিক কাজ করিনি। মানুষ-সেবা করতে এসেছি। ব্যক্তিগতভাবে সুজন চক্রবর্তী, বিকাশরঞ্জ ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষরা জানেন, রাজনীতি ছেড়ে বলুন, আমি চোর?' রবিবার বাড়িতে সিবিআই হানার পরে বলেছিলেন ফিরহাদ। আর এবিপি আনন্দ সেই সব রাজনীতিকদের থেকে ফিরহাদের প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইল। 


 'আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জানেন, বলুন আমি চোর?' 


পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রবিবার তাঁর বাড়িতে CBI-এর তল্লাশির পর, পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়রের মুখে শোনা গেছে চোর ও চুরির কথা। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে মামলার জন্য যে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে বারবার নিশানা করে আসেন রাজ্য়ের মন্ত্রীরা, যে বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে আন্দোলনের নেপথ্যে যে সিপিএমের হাত দেখতে পান তাঁরা, এবার আত্মপক্ষ সমর্থনে কার্যত সেই বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তীদেরই পাশে পেতে চাইলেন ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদের প্রশ্ন, 'আমি কি চোর? আমি কি চুরি করেছি, আমি কি চোর?বিকাশ ভট্টাচার্য ব্যক্তিগতভাবে বলুন, আমি চোর? দিলীপ ঘোষ আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জানেন, বলুন আমি চোর?' 


CPM নেতা সুজন চক্রবর্তী বললেন, 'যিনি লিখেছিলেন সততার প্রতীক মমতা, তিনিও সততার প্রতীক মমতা লিখতে পারছেন না। ভাইপোর কাছেও সার্টিফিকেট নিতে পারছেন না...কারণ তৃণমূলের যত বড় নেতা , তত বড় চোর, তাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার কোনও যোগ্যতা নেই। সেই কারণে নিজে বাঁচতে গিয়ে বিকাশরঞ্জন ও আমার নাম করেছে। কিন্তু আমরা তো বলার কেউ নই ! ' 


বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, 'ব্যক্তিগতভাবে অবশ্যই চিনি, মনে করি না, কিন্তু নারদের ছবি দেখেই তো এই ধারনা জন্মাল, এখনও বলছি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না, কিন্তু উনি যাদের সঙ্গে আছেন, তারা তো দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের সঙ্গে আছেন।' 


দিলীপ ঘোষ বলেন, ' কোর্টের আদেশে এই কাজ হচ্ছে, তো কোর্টের সামনে নিজেকে পরিষ্কার করতে হবে। কারও বাড়িতে সিবিআই গেছে, বা ডেকেছে মানেই সে চোর, তা নয়। নিজে চোর নয়, সেটা প্রমাণ করতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'যাদের নিজেদের প্রতি বিশ্বাস আছে, সামনাসামনি হওয়া উচিত, তথ্য দেওয়া উচিত। সময়ের সঙ্গে ঠিক হয়ে যাবে।'


এখন পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় CBI-ED কতদূর তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে, আর ফিরহাদ হাকিম নিজেকে কীভাবে নির্দোষ প্রমাণ করবেন, সেটা সময়ই বলবে।