অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: কুয়োয় পড়ে যাওয়া হস্তিশাবককে (Baby Elephant Rescued) উদ্ধার করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হল গ্রামবাসী ও বন দফতর। সাকরাইল ব্লকের (Jhargram) কলাইকুন্ডা রেঞ্জর ভুরুচাটি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। তবে উদ্ধারে পর শাবকটির মা তাকে কাছে টেনে নেয়। সেটি দেখে নিশ্চিন্ত গ্রামবাসী ও বন দফতরের কর্মীারা।


কী ঘটেছিল? 
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, গত কাল গভীর রাতে হঠাৎ করেই হাতির তীব্র আর্তনাদ শুনতে পান তাঁরা। অন্ধকারেও টের পান, তীব্র দাপাদাপি চলছে। কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারেন, হাতির দল কোনও বিপদে পরে এই ধরনের কাণ্ডকারখানা করছে। সঙ্গে সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। দেখতে পান, একটি মাদি হাতি একবার করে গর্তের সামনে ছুটে আসছে, ফের জঙ্গলের দিকে চলে যাচ্ছে। সঙ্গে তীব্র আর্তনাদ। ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়, ওই হাতির দলে থাকা একটি শাবক কোনও ভাবে কুয়োয় পড়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। সময় নষ্ট না করে জেসিবি নিয়ে হাজির হন বন দফতরের আধিকারিকরা। তত ক্ষণে গ্রামবাসীরা 'হুলা' জ্বেলে হাতির দলটিকে কুয়ো থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে নিয়ে যান। তারপরই কুয়োর একাংশ কেটে রাস্তা করে দেওয়া হয়। আস্তে আস্তে ওই রাস্তা ধরেই কুয়ো থেকে উঠে আসে হস্তিশাবকটি। তবে এই পুরো সময়টাই বন দফতরের আধিকারিকরা গ্রামবাসীকে অনুরোধ করেছিলেন কেউ যাতে হাতিটিকে না ধরেন। উদ্ধার হওয়ার পর মা হাতিটি শাবককে কাছে টেনে নিতে দেরি করেনি। আজ সকালেও দলের সঙ্গে শাবকটিকে ঘুরতে দেখে নিশ্চিন্ত হন গ্রামবাসীরা। আর কোনও সংশয় নেই শাবকটির। এই ঘটনার 'মধুরেন সমাপয়েৎ' হলেও ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রতি দিন কয়েকশো হাতি তান্ডব চালাচ্ছে। তাদের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল গ্রামবাসী। তবু হাতি কোনও বিপদে পড়লে গ্রামবাসীরাই সকলের আগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন। 

মৃত্যু...
জুলাইয়ের একেবারে গোড়ার দিকে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বেহুঁশ করার সময় ঝাড়গ্রামে মৃত্যু হয়েছিল এক দাঁতাল হাতির। বিড়িহান্ডি বিটের কাজলার উন্মত্ত ওই হাতিটিকে ট্র্যাক করা হয়। তার পরই এই ঘটনা। তার আগের, গত এক মাসে হাতির আক্রমণে অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয় ঝাড়গ্রামে। তাই বন দফতর ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বেহুঁশ করার চেষ্টা করেছিল দাঁতালটিকে। সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম বনদফতরের কর্মীরা বিড়িহান্ডি বিটের  কাজলার জঙ্গলে উন্মত্ত হাতিটিকে ট্র্যাক করেন। পরে বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে তাকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তার পর সেটি অজ্ঞান হয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চোখ বেঁধে তাকে গাড়িতে তোলা হয়। কিন্তু পরে বন দফতর জানায়, হাতিটিকে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার সময় পথেই সে মারা যায়। 


আরও পড়ুন:অনুভূমিক থেকে উল্লম্ব, অবস্থান পাল্টাবে বিক্রম, তুলবে সেলফিও, শেষ ২০ মিনিটই উদ্বেগের কারণ