পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : আশঙ্কাই সত্যি হল। গার্ডেনরিচের পাহাড়পুরে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হল আরও এক ব্যক্তির মৃতদেহ। বহুতল বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১। পুলিশ, উদ্ধারকারী দল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোরে যাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, তিনি এলাকারই বাসিন্দা।
মৃত বহুতল বিপর্যয়ে ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমের সহযোগী
সূত্রের খবর, মৃতের নাম আব্দুল রউফ নিজামি। তিনি শেরু নামে পরিচিতি ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, তিনি বহুতল বিপর্যয়ে ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমের সহযোগী ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে দাবি, গার্ডেনরিচে যে নির্মীয়মাণ বহুতলটি ভেঙে পড়েছে, তাতে একসঙ্গেই কাজ করছিলেন মহম্মদ ওয়াসিম ও আব্দুল রউফ নিজামি।
মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে
দুর্ঘটনার পর থেকেই স্থানীয়দের একাংশ দাবি করে আসছিলেন, ভেঙে পড়ার সময় বহুতলেই ছিলেন আব্দুল রউফ নিজামি। কংক্রিটের চাঙড়ের নীচে চাপা পড়ে যাওয়ার পর ফোনে তাঁর সঙ্গে কথাও হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে নিথর দেহ উদ্ধার হল তাঁর। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে আব্দুল
রউফ নিজামির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হকিম। কলকাতা পুরসভার উদ্ধারকারী দল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর অনুমান, গার্ডেনরিচে ধ্বংসস্তূপের নীচে আর কেউ আটকে নেই।
বৃহস্পতিবারই গার্ডেনরিচে বহুতল-বিপর্যয়ে এবার ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ করেছে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের হোমিসাইড শাখা। লালবাজার সূত্রে খবর, বিভিন্ন ইমারতি দ্রব্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে ন্যাশনাল টেস্টিং সেন্টারে। খতিয়ে দেখা হবে, কী গুণমানের ইমারতি দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছিল। গার্ডেনরিচের পাহাড়পুরে ভেঙে পড়া বহুতলে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল ও কলকাতা পুরসভা তারপরও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যায়। আর তারপরই শুক্রবার ভোরে এই দেহ উদ্ধার।
গ্রেফতার হয়েছেন অভিযুক্ত প্রোমোটার। ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপও একদিন সরে যাবে। কিন্তু, ফিরে আসবেন না বেঘরে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়া মানুষগুলি। তার দায় কি কেউ নেবে? নাকি দায়ঝাড়াই চলবে?
আরও পড়ুন :