রুমা পাল ও সমীরণ পাল, কলকাতা : রাজ্য সরকার-রাজ্যপাল সংঘাত আরও তুঙ্গে ! ফের একাধিক বিশ্ববিদ্য়ালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য (Interim Vice Chancellors) নিয়োগ করলেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে কেরলের অবসরপ্রাপ্ত IPS অফিসার সিএম রবীন্দ্রনকে। এই প্রেক্ষাপটে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। 


উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য়পাল-রাজ্য় সরকার বেনজির সংঘাতের আবহে সার্চ কমিটি গড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের নির্দেশে রাজ্য় সরকার, আচার্য ও UGC - ৩ পক্ষই জমা দিয়েছে নামের তালিকা। কিন্তু, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সার্চ কমিটি গঠনের সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই, রাজ্যের আরও ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য ও রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor CV Ananda Bose)।


রাজভবন সূত্রে জানা গেছে, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে অচিন্ত্য় সাহাকে। মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয়েছে বি বি পারিদাকে। কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিখিলচন্দ্র রায়কে নিয়োগ করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে দিলীপ মাইতির নাম ঘোষণা করেছে রাজভবন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) অন্তর্বর্তী উপাচার্য করা হয়েছে সি এম রবীন্দ্রনকে।

যিনি, কেরলের অবসরপ্রাপ্ত IPS এর আগে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এম ওয়াহাব-কে নিয়োগ করেন আচার্য-রাজ্যপাল। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সরকারপক্ষ। রাজ্যপালের আরেক অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসারকে অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেছেন, পুলিশ দিয়ে বিশ্ববিদ্য়ালয় চালানো যায় কিনা আমার জানা নেই। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।

সেপ্টেম্বরের শুরুতেই, বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য়ের ১৬টি বিশ্ববিদ্য়ালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেন সিভি আনন্দ বোস। উপাচার্যদের অনেকেই প্রাক্তন প্রশাসনিক কর্তা কিম্বা অবসরপ্রাপ্ত IPS। এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে রাজ্য় সরকার (West Bengal Government)। কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) জানায়, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি তৈরি করে দেবে সর্বোচ্চ আদালতই। তার জন্য়, রাজ্য় সরকার, আচার্য ও UGC- তিন পক্ষকেই ১০ দিনের মধ্য়ে ৫ জন করে বিশিষ্ট ব্য়ক্তির নাম পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশ বদলের আর্জি জানিয়ে, গত বুধবার রাজ্য় সরকার আবেদন জানায় যে, সার্চ কমিটিতে রাজ্য় সরকার, রাজভবন, UGC ছাড়াও - মুখ্য়মন্ত্রী ও উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধিকেও রাখা হোক।


কিন্তু এই আবেদন খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ইতিমধ্যে ৩ পক্ষই আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নামের তালিকা জমা দিয়েছে। তবে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি এখনও গঠিত হয়নি। এই প্রেক্ষাপটেই আচার্যের তরফে আরও ৬ বিশ্ববিদ্যালয়েরর অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে নতুন মাত্রা যোগ হল রাজ্য-রাজনীতিতে।


আরও পড়ুন- 'গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পদে থেকে কি আর্থিক দিক থেকে লাভবান হচ্ছেন ফিরহাদ?' চিঠি রাজ্যপালের


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial