কলকাতা: নজরদারি সংক্রান্ত নির্দেশ-বিতর্কের মধ্যেই সারপ্রাইজ ভিজিট রাজ্যপালের। পূর্ব নির্ধারিত সূচি ছাড়াই হঠাৎ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান রাজ্যপাল। জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনাও করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষর সঙ্গে আলোচনা করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। অধ্যক্ষদের নিজের লেখা বইও উপহার দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরদারি সংক্রান্ত নির্দেশ-বিতর্কের মধ্যেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তিনি। 


দিল্লি থেকে ফিরে রাজভবনের সামনে থেকে ইউ টার্ন নিয়ে সোজা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল। সকালের পর বিকেলে ফের গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করলেন আচার্য। দার্জিলিঙে রাজভবনে আমন্ত্রণ জানালেন পড়ুয়াদেরকেও। 


বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আর্থিক নির্দেশিকা নিয়ে রাজভবনের নির্দেশ ঘিরে বিতর্কের মধ্য়েই, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সারপ্রাইজ ভিজিটে রাজ্যপাল। সকাল-বিকেল দুবেলা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছলেন সিভি আনন্দ বোস জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে অধ্যক্ষদের সঙ্গে বসলেন আলোচনায়। সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ দিল্লি থেকে ফিরে রাজভবনে ঢুকতে গিয়েও গাড়ি ঘুরিয়ে নেন রাজ্যপাল। সোজা পৌঁছে যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখনও উপাচার্যও এসে পৌঁছনি! তাঁর জন্য় অপেক্ষা করতে থাকেন আচার্য তথা রাজ্য়পাল।


সকাল ১১.০৫ নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে রাজভবনে রওনা দেন রাজ্যপাল। কিন্তু এরপরও অপেক্ষা করছিল চমক। বিকেল ৩টে নাগাদ রাজভবন থেকে ফের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে যান সিভি আনন্দ বোস। উপাচার্য ছাড়াও সেখানে ছিলেন বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা। তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় রাজ্যপালের। 


বিকেল ৪.৫০ নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল অধ্যক্ষদের নিজের লেখা বই 'সাইলেন্ট সাউন্ডস গুড' উপহার দেন আচার্য। আচার্যের সারপ্রাইজ ভিজিট তরজায় তৃণমূল-বিজেপি। 


সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক লেনদেন প্রসঙ্গে রাজভবনের নয়া নির্দেশিকায় তীব্র আপত্তি জানানো হয়েছিল রাজ্যের তরফে নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আচার্য তথা রাজ্যপালের অনুমতি নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক কাজের রিপোর্ট রাজভবনে ই-মেল মারফত জানাতে হবে আচার্যের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে পারবেন উপাচার্য। যা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। 


এরপর সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে শুধু নির্দেশিকাতেই থেমে থাকলেন না রাজ্যপাল। সশরীরে পৌঁছে গেলেন ক্যাম্পাসে। শুধু তাই নয়, পড়ুয়াদের সঙ্গেও যোগ দিলেন একান্ত আলাপচারিতায়। পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিলেন নিজের লেখা বই 'হান্ড্রেড ডেজ এন্ড বিঅন্ড'। 


শুধুমাত্র রাজভবন থেকেই যে তিনি তাঁর দায়িত্ব পরিচালনা করবেন না, এদিন কার্যত তা বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যপাল। অধ্যক্ষদের 'সাইলেন্ট সাউন্ডস গুড' উপহার দিয়ে এদিন ক্যাম্পাস থেকে বেরনোর সময় তাৎপর্যপূর্ণভাবে চুপই রইলেন সিভি আনন্দ বোস।