জলপাইগুড়ি :  উত্তরপ্রদেশ থেকে অরুণাচল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে নিম্নচাপ অক্ষরেখা। তার জেরে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে চলছে প্রবল বর্ষণ। শুধু পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য এলাকাতেই নয়, প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভূটানেও চলছে দুর্যোগ। বৃষ্টি বাড়ছে ক্রমশ। ভেজা পাহাড়ে নামছে ধস। নেপালে তো পরপর ধসে আটকে বহু পর্যটকও। এর জের এসে পড়ছে এ রাজ্যের পাহাড়ি এলাকাতেও। ভুটান পাহাড়ে চলছে প্রবল বৃষ্টি। তা জেরে হাসিমারা ঝোড়ায় জলোচ্ছ্বাসে আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁও শহরে ঝর্নাবস্তির রাস্তায় নেমেছে ধস।


অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
বুধবারও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে উত্তরবঙ্গে। বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার কথা। দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমে ধসের আশঙ্কা রয়েছে।  পাহাড়ি পথ  এখন বেশ বিপজ্জনক। পথে দৃশ্যমানতা কম। পর্যটকদের সতর্ক ভাবে যাতায়াতের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।  অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে । পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম, এই জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। 


নেপালে দুর্যোগ
অন্যদিকে, নেপালে গিয়ে ধসে আটকে পড়েন বহু বাঙালি পর্যটক। সম্প্রতি মুক্তিনাথ দর্শনে যান রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বাঙালি পর্যটকরা। তাঁরা জানান, কয়েকদিন ধরে নেপালে প্রবল বৃষ্টি হয়। প্রায় ১৫টি জায়গায় ধস নেমেছে। এর ফলে আটকে পড়েছে পর্যটক বোঝাই একাধিক গাড়ি।


ঝর্নার জল খেতে বাধ্য হচ্ছেন পর্যটকরা
নেপালে এর ফলে দেখা দিয়েছে খাবার ও পানীয় জলের সমস্যা ! ঝর্নার জল খেতে বাধ্য হচ্ছেন পর্যটকরা। দিল্লির তরফে নেপাল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আটকে পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। 


কেন এত বৃষ্টি?
এই সময়ে কেন এত বৃষ্টি? আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর,উত্তরপ্রদেশ থেকে অরুণাচল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে অক্ষরেখা। তার কারণেই প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে রাজ্যে। যার জেরে বৃষ্টি হচ্ছে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে। দুর্গাপুজোর বিজয়ার দিনই মালবাজারে হড়পা বানে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার ঘটে। প্রাণ যায় ৮ জনের। এই দুর্যোগ আবার আসতে আসতেই পারে। তাই সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে। 


কালীপুজোতেও বৃষ্টি?
দুর্গাপুজোর পর কালীপুজোতেও পিছু ছাড়ছে না বৃষ্টি। বর্ষা বিদায়ের আগে মাঝ অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ তৈরির আশঙ্কা। ১৫ অক্টোবর প্রথম ও ২০ অক্টোবরের মধ্যে দ্বিতীয় ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি চলবে। পার্বত্য এলাকায় ধস ও নদীর জলস্তর বাড়ার আশঙ্কা। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গে কমবে বৃষ্টির পরিমাণ। বজায় থাকবে গরম ও অস্বস্তি। কলকাতায় আংশিক মেঘলা আকাশ। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দু’-এক পশলা বৃষ্টির সম্ভাবনা।