কলকাতা: ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বড় নির্দেশ আদালতের (Calcutta High Court)। রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। সমস্ত নিয়ম মেনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছ। পাশাপাশি অ্যান্টি র‍্যাগিং স্কোয়াড (Anti ragging squad)  না থাকলে তাও গঠনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির।


'হলফনামা দিয়ে জানাক রাজ্য'


মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন,  রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সময়মতো ছাত্র সংসদ নির্বাচন করানোর জন্য কোনও নির্দেশিকা কি জারি করেছে রাজ্য? একইসঙ্গে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটি এবং অ্যান্টি-র‍্যাগিং স্কোয়াড গঠনের কোনও নির্দেশিকা কি দেওয়া হয়েছে কিনা সব হলফনামা দিয়ে জানাক রাজ্য। 


নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশিকা রাজ্য না দিয়ে থাকলে আদালত সেটা দেবে। রাজ্যের অনুমোদন নিয়ে সমস্ত নিয়ম মেনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাতে হবে। এই মর্মে নির্দেশ দেবে আদালত। জানালেন প্রধান বিচারপতি। অ্যান্টি-র‍্যাগিং স্কোয়াড না থাকলে তাও গঠনের নির্দেশ দেবে হাইকোর্ট, জানালেন প্রধান বিচারপতি।


মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত:


গত ২৮ অগাস্ট ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, তৃণমূল ছাত্র পুজোর পরই, কলেজ-বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তার আগে বিল সংশোধন করা হবে।  এ প্রসঙ্গে মমতাকে পাল্টা নিশানা করে বিরোধীরা বলেন, গন্ডগোল রুখতেও দিলেন বার্তা। ভোট করাতে ভয় পাচ্ছেন নেত্রী। 


পুজোর পরই হবে কলেজ-বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন।  প্রতিষ্ঠা দিবসে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মঞ্চ থেকে নির্বাচন নিয়ে এমনই ইঙ্গিত দেন তৃণমূলনেত্রী। ছাত্র নির্বাচন হচ্ছে না কেন, কেন এতদিন ধরে ভোট বকেয়া, ছাত্র ভোট না করিয়ে কি ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চাইছে শাসকপক্ষ? গত কয়েকমাস ধরে, এমনই একাধিক প্রশ্নে তেঁতে রয়েছে শহর থেকে শহরতলির একাধিক কলেজ-বিশ্ববিদ্য়ালয়। 


এ নিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন হয় যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি-কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজে। এরইমধ্য়ে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত ভোটের (panchayat election) পরই হবে ছাত্র নির্বাচন। কিন্তু, পঞ্চায়েতের রেজাল্ট বেরোনোর পরও প্রায় ২ মাস হতে চলল। ভোটের দেখা নেই। এরই মধ্য়ে মুখ্য়মন্ত্রীর এই মন্তব্য়। পুজোর পরই ভোট করানোর আশ্বাস দেন তিনি। 


মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, কলেজ পড়ুয়ারাই সংশ্লিষ্ট কলেজে নির্বাচন করবে। পুলিশকে বলব, কোনও বহিরাগতকে যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয় নাক গলাতে না দেওয়া হয়। স্থানীয় নেতারাও ছাত্রদের পাশে থাকবেন। পতাকা-ঝালমুড়ি কিনে দিয়ে সাহায্য করবেন। আমরা যখন ছাত্র রাজনীতি করতাম, কেউ পাশে দাঁড়াত না। নবীন বরণের ব্যবস্থাও করে দিতে হবে স্থানীয় নেতাদের।


পঞ্চায়েত হোক বা পুরসভা, লোকসভা হোক বা বিধানসভা, পশ্চিমবঙ্গে ভোট আর অশান্তি এ দুটো শব্দ যেন সমার্থক। এদিন মুখ্য়মন্ত্রীর ছাত্র ভোটের ঘোষণার ঠিক আগে, রবিবার কলেজে কলেজে বকেয়া ছাত্র নির্বাচন নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় শোনা যায় সৌগত রায়ের গলাতেও।