সুনীত হালদার ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা: ২০১৪-র টেট (TET) উত্তীর্ণদের আন্দোলন মঞ্চে হাওড়ার মাংস বিক্রেতা! আর তাঁর হাতে থাকা চাকরির দাবিতে একটি পোস্টার নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক! ছবিটি ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যেই। আর সুদাম গিরি নামে ওই যুবকের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে এই ছবি ভাইরাল করা হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা।


লাগাতার আন্দোলন: হকের চাকরির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলছে শহরের বুকে। বঞ্চিত যোগ্যপ্রার্থীরা রোদ-ঝড়-জলের মধ্যেও আন্দোলনে (Job Seeker) অনড়। তবে এরইমধ্যে এই ছবি ঘিরে বিতর্কের ঝড়! পোস্টার হাতে ২০১৪-র টেট পাস চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে বসে আছেন এক যুবক। তাতে লেখা আমরা টেট পাশ, প্রশিক্ষিত, তবুও আমরা বঞ্চিত? ভাইরাল হওয়া এই ছবিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তাঁর নাম সুদাম গিরি।

পেশাগতভাবেই মুরগির মাংস বিক্রি করেন: হাওড়ার (Howrah) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা সুদামের কাশীনাথ চ্যাটার্জি লেনে তাঁর মাংসের দোকান রয়েছে। তিনি টেট উত্তীর্ণ নন! পেশাগতভাবেই মুরগির মাংস বিক্রি করেন। হাওড়ার মাংস বিক্রেতা সুদাম গিরিকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কী করেন? তিনি জানান তিনি কারবার করেন। কীসের কারবার জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন 'মাংসেরই কারবার করি। মুরগির মাংসেরই কারবার করি'। এরপর মাংস বিক্রিতা জানান, তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেননি।


কেন এসেছিলেন সুদাম গিরি? নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে হাজির হয়েছেন বিভিন্ন দল...সংগঠন...ব্যক্তিত্বরা। সুদামের দাবি, বিজয়া দশমীর দিন, পরিচিতদের সঙ্গে নিয়ে তিনিও সংহতি জানাতে হাজির হন ২০১৪-র টেট প্রার্থীদের আন্দোলন মঞ্চে। কিন্তু, সেই ছবি ঘিরেই যত বিতর্ক!


হাওড়ার মাংস বিক্রেতা ও বিজেপি কর্মী সুদাম গিরির কথায়, আমি নিজে টেট প্রার্থীও না। টেটও দিতেও যাইনি। যেহেতু ওরা একটা বিষয় নিয়ে, সত্যি আমারও বিষয়টি লেগেছে, আমিও তো কমবেশি পড়াশোনা করেছি। একটা চাকরি পাওয়া দরকার। আজকের দিনে পড়াশোনা করেও রাস্তার ধারে মুরগির মাংস বিক্রি করেই খেতে হয়। টাকা পয়সা ইনকাম কষ্ট করে ইনকাম করাটা কতটা কষ্টের সেই উপলব্ধি করি বলেই গিয়েছিলাম। বিজেপি কর্মী আমি। কারা ভাইরাল করল এই ছবি? সবাই তো জানেন। 


কুণাল ঘোষের বয়ান; তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, বাইরের লোক এনে বসানো হলে অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা তো আলোচনা চাইছি৷ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় কথা বলেছেন। তার পরেও ধর্না মঞ্চ, বিরোধীদের মঞ্চ করে দেবেন সেরকম হলে যে কেউ এসে ছবি তুলবেন। তবে এই বিতর্কের মধ্যেও বঙ্গবাসীর আবেদন একটাই, সব যোগ্য বঞ্চিত প্রার্থীরা চাকরি পান।