সুনীত হালদার, হাওড়া: ১০০ বছর আগে একটা ট্রেন নিয়ে হাওড়া স্টেশনের যাত্রা শুরু হলেও আজ এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ১১ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। আজ থেকে একশ বছর আগে যাত্রা শুরু হয় হাওড়া স্টেশনের। তাই হাওড়া স্টেশনে শতবর্ষ উপলক্ষে ডিভিশনের উন্নয়নে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিল পূর্ব রেল।
বুধবার এই ব্যাপারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা ঘোষণা করেন হাওড়ার ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীব কুমার। এদিন এই উপলক্ষে একটি লোগো প্রকাশ করেন তিনি। ডিআরএম জানান, হাওড়া ডিভিশনের শতবর্ষ উপলক্ষে এই ডিভিশনে সময়ে ট্রেন চালানো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিদিনই হাওড়া স্টেশন দিয়ে গড়ে ১১ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশই শহরতলির লোকাল ট্রেনের যাত্রী। বাকি ৩৫ শতাংশ দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রী। স্টেশনে প্রতিদিন ১৬১ জোড়া লোকাল ট্রেন এবং ৪৫ জোড়া দূরপাল্লার ট্রেন যাতায়াত করে। ট্রেন পরিষেবা আরও উন্নত করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। হাওড়া স্টেশনে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্ল্যাটফর্ম সংখ্যা হবে ২৪ টি।
পুরনো ডিআরএম অফিসের পরিবর্তে রেল মিউজিয়াম এর পাশেই তৈরি করা হচ্ছে নতুন ডিআরএম অফিস। মাস দুয়েকের মধ্যেই তা চালু হবে। আরও দ্রুত এবং সময়ে ট্রেন চালাতে হাওড়া স্টেশনে ঢোকার মুখে চাঁদমারি সেতুর পাশাপাশি বেনারস রোড ব্রিজ নতুনভাবে তৈরি করা হচ্ছে। আশা করা যায় এই বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। হাওড়া ডিভিশনের ১৫টি স্টেশনকে অমৃত ভারত প্রকল্পে আরও উন্নত মানের করে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যান্ডেল স্টেশনে একটি আধুনিক মানের কোচিং ডিপো তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তর ভারত এবং পূর্ব ভারতে আরো বেশি করে ট্রেন চালানো যাবে।
ডিভিশনের সূচনার শতবর্ষকে স্মরণীয় করে তুলতে পূর্ব রেলের শতবর্ষের বিভিন্ন ঘটনার ছবি, পোস্টার, পুরস্কারের ছবি ইত্যাদি দিয়ে একটি লোকাল ট্রেনের বগিকে সাজিয়ে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সাফল্যের কথা উল্লেখ করে একটি স্মরনিকা প্রকাশ করা হবে। রাজধানী এক্সপ্রেসের একটি ইঞ্জিনকেও এই উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হবে। এরই সঙ্গে শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে একটি পোস্টাল কভার প্রকাশ করা হবে।
এদিন তিনি আরও বলেন যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হাওড়া স্টেশনকে আরও অত্যাধুনিক মানের সিসিটিভি বসানো হচ্ছে। হাওড়া, ব্যান্ডল ও কাটোয়ায় মহিলা আরপিএফ কর্মীদের ব্যারাক তৈরি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে পূর্ব রেলের শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে বছরভর একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। যা কার্যকর করতে এখন থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছেন রেল কর্তারা।