হাওড়া: হাওড়ায় বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যুত্ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট তলব করল বিদ্যুত্ দফতর। আজ বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে ওই রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। গতকাল হাওড়ার জগত্বল্লভপুরে ওই ঘটনা ঘটে। বাড়ির বাইরে ল্যাম্পপোস্টের খোলা তারের সংস্পর্শে এসে বিদ্যুত্বস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর। সূত্রের খবর, সোমবারই সব জেলার বিদ্যুত্ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে কথা বলেন বিদ্যুত্মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ঝড়জলের প্রেক্ষিতে সতর্ক করে দেন আধিকারিকদের। তারপরও এই ঘটনা ঘটায় রিপোর্ট তলব করল বিদ্যুত্ দফতর।
ফের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট (Electrocution) হয়ে ছাত্রীর মৃত্যু। এবার ঘটনাস্থল হাওড়ায় (Howrah)। মৃতা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ল্যাম্পপোস্ট খোলা তার থেকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় সেই ছাত্রীর। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
১২ জুলাইয়ের পর ৯ অগাস্ট। আবার সেই হাওড়া, সেই বিদ্যুতের মরণ ফাঁদ! সেই দুর্ঘটনা! আবার কোল খালি হয়ে গেল এক মায়ের। ফের বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল হাওড়ায়! ল্যাম্পপোস্টের খোলা তার কেড়ে নিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর প্রাণ!
এই নিয়ে চলতি বছরে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ৪ জনের। মৃতের নাম তৃষা ধক। বয়স ১৩ বছর। জগত্বল্লভপুরের নরেন্দ্রপুর পশ্চিমপাড়ায় শোকের ছায়া। পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধে ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল তৃষা। কাদার মধ্যে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সময় ল্যাম্পপোস্টের ছেঁড়া তারে হাল লেগে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয় সে। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা।
চোখের সামনে এখনও যেন ভাসছে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে বোনের ছটফট করার ছবিটা! মঙ্গলবার হাওড়ার জগত্বল্লভপুরের নরেন্দ্রপুর পশ্চিমপাড়ায় এই ল্যাম্পপোস্টেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১৩ বছরের তৃষা ধকের। এই ঘটনাতেই উঠে আসছে বিদ্যুত্ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ!
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শুধু ঘাতক পোস্টটিই নয়, এলাকার এরকম আরও বেশ কয়েকটি পোস্ট রয়েছে, যেগুলি বিপজ্জন্ক অবস্থায় রয়েছে। একাধিক পোস্টে এখনও ঝুলে রয়েছে আর্থিং-এর তার! কোথাও আর্থিংয়ের তার কাটা অবস্থায় রয়েছে!
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এগুলির কয়েকটিতে এখনও বিদ্যুত্ সংযোগ রয়েছে। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ফের ঘটে যেতে পারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বিদ্যুত্ বণ্টন সংস্থার তরফে। এই ধরনের অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়!
গত ২ মাসেরও কম সময়ে, শুধু হাওড়া জেলাতেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই বিদ্যুত্ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে!
বর্তমানে রাজ্যে নিম্নচাপের জেরে উপকূলবর্তী জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তার আগে সোমবারই জেলার বিদ্যুত্ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদ্যুত্মন্ত্রী। খোলা অবস্থায় পড়ে থাকা তার, জমা জল নিয়ে সতর্ক করা হয়। কিন্তু তার একদিনের মধ্যেই ঘটে গেল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! যদিও সূত্রের খবর, এই ঘটনায় কার গাফিলতি রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে বিদ্যুত্ বণ্টন সংস্থা। পাশাপাশি বণ্টন সংস্থার স্থানীয় অফিসের রিপোর্ট তলব করেছে বিদ্যুত্ দফতর।