হিন্দোল দে, রঞ্জিত সাউ ও করুণাময় সিংহ, কলকাতা: মাঝে মাঝেই পড়ুয়া খেতে আসতেন রেস্তোরাঁয়। হাতে থাকত আইফোন। তা দেখে বারবার প্রশ্ন করতেন রেস্তোরাঁর মালিক। নিউটাউনে মালদার ছাত্র খুনের পিছনে কি অর্থলিপ্সা? তদন্তে পুলিশ।


কী জানা গেল?
কোল খালি হয়ে গেল আরও এক মায়ের! পরিবার-পরিজন ছেড়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এই শহরে এসেছিলেন ১৯ বছরের পড়ুয়া। কালিয়াচকের ষোলো মাইল থেকে ৩০০ কিলোমিটারের বেশি দূরে, সহপাঠীদের সঙ্গে আস্তানা গেড়েছিলেন মহিষবাথানের ভাড়া ফ্ল্যাটে। নিচ্ছিলেন NIIT-এর প্রস্তুতি। সেখান থেকে আর ঘরে ফেরা হল না তরুণের। তবে কি অর্থই কি অনর্থ হয়ে উঠল? টাকার লোভেই কি পড়ুয়াকে খুন? কাল হল ছাত্রর হাতে থাকা দামি আইফোন? নিউটাউনে মালদার ছাত্র সাজিদ হোসেন খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে তেমনই অনুমান পুলিশের। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে একটি গৌতম সিংহ নামে এক রেস্তোরাঁর মালিক ও তাঁর বন্ধুকে। 
নিউটাউন থানার তারুলিয়া সেকেন্ড লেনের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন গৌতম। পুলিশ জানতে পেরেছে, অসমে হোমগার্ডের চাকরি করতেন তিনি। কিন্তু কোনও কারণে সেই চাকরি চলে যায়। তারপর নিউটাউনে এসে রেস্তোরাঁ খোলেন। পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নেন। পুলিশ সূত্রে খবর, রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সূত্রেই গৌতমের সঙ্গে আলাপ হয় সাজিদের। পড়ুয়ার হাতে আইফোন দেখে, তাঁর বাবা কী করেন জানতে চেয়েছিলেন গৌতম। বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৪ তারিখ বিকেলে একটি মলে যান সাজিদ। ১০ মিনিট পর গৌতমের সঙ্গে বেরোতে দেখা যায়। তারপরই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় গৌতমকে। খুনের কথা স্বীকার করার পর গ্রেফতার করা হয় তাঁকে ও তাঁর বন্ধুকে। গৌতমের ভাড়বাড়ির খাটের নীচে সুটকেসে উদ্ধার হয় পলিথিন ও সেলোটেপ জড়ানো সাজিদের মৃতদেহ।  এদিন ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ঘুরে দেখে এলাকা। তদন্তকারীর কথা বলেন বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে। 


যা ঘটেছিল...
গত কাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেলে নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। অভিযোগ, এরপর পরিবারের কাছে মুখে সেলোটেপ বাঁধা অবস্থায় সাজিদের ছবি পাঠিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। যদিও পরে সেই ছবি ডিলিট করে দেওয়া হয়। পুলিশের অনুমান, মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই পড়ুয়াকে খুন করা হয়েছিল। প্রথমে মুখে প্লাস্টিক জড়িয়ে সেলোটেপ বাঁধা হয়, তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বালিশ চাপা দেওয়া হয়, বলে পুলিশ সূত্রে খবর। 


আরও পড়ুন:পুজোর মুখে সুখবর শোনাল কলকাতা মেট্রো, ভোররাত পর্যন্ত চালু থাকবে পরিষেবা, কবে কতক্ষণ ?