উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায় ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: কয়েকমাস আগেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে ম্যাজিক দেখিয়েছিল বাম ও কংগ্রেস যুগলবন্দি। যদিও পরে বায়রন বিশ্বাস তৃণমূলেই যোগ দিয়েছেন কিন্তু সাগরদিঘিতে তৃণমূল ও বিজেপিকে বহু পিছনে ফেলেছিল বাম ও কংগ্রেস জোট। সেই ছবি একেবারেই অমিল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে। তারপরেই একাধিক প্রশ্ন উঠল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে। 


পঞ্চায়েত ভোটের তুলনায় বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিএমের ভোট শতাংশ কমে প্রায় অর্ধেক হল। তাহলে কি তৃণমূলের সঙ্গে 'INDIA' জোটে সামিল হওয়ার প্রভাবেই কি সাগরদিঘির মতো ফল মিলল না ধূপগুড়িতে? জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার ফলেই কি বিশ্বাসযোগ্য়তা ধাক্কা খাচ্ছে? এমন সম্ভাবনাকে সামনে রেখেই এরাজ্য়ে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে আরও বেশি করে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।


সাগরদিঘি-ধূপগুড়ি,দুই জায়গাতেই জোট বেঁধেছিল সিপিএম-কংগ্রেস। দুই জায়গাতেই তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে সরব ছিল তারা। তাহলে সাগরদিঘির পুনরাবৃত্তি ধূপগুড়িতে হল না কেন? সূত্রের খবর, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই সিপিএমের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, তবে কি জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে মঞ্চ ভাগের সিদ্ধান্তই এ রাজ্য়ে দলের পক্ষে ক্ষতিকারক হচ্ছে?


একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের জেতা আসন সাগরদিঘিতে এবছরের মার্চে জয় ছিনিয়ে আনে বাম-কংগ্রেস জোট। সম্প্রতি ধূপগুড়িতেও ফের সেই মডেলই অনুসরণ করে তারা। সাগরদিঘিতে যেখানে বামেরা কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল, সেখানে ধূপগুড়িতে সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন করে কংগ্রেস। একসঙ্গে সভাও করেন মহম্মদ সেলিম এবং অধীর চৌধুরী। কিন্তু, ধূপগুড়ির উপনির্বাচনে তৃতীয় হয় সিপিএম। জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী। পঞ্চায়েত ভোটে ধূপগুড়িতে প্রায় ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল সিপিএম। কিন্তু, দুমাসে ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সেটা নেমে এসেছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশে। সূত্রের খবর, এই আবহে সিপিএমের রাজ্য় কমিটির বৈঠকেও প্রশ্ন ওঠে তৃণমূলের সঙ্গে 'INDIA' জোটে সামিল হওয়ার প্রভাব পড়ল? জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে একমঞ্চে থাকার কারণে কি এরাজ্য়ে সিপিএমের বিশ্বাসযোগ্য়তা ধাক্কা খাচ্ছে?


আশঙ্কা যে একটা রয়েছে তা উঠে এসেছিল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথাতেও। এই প্রসঙ্গে আগেই তিনি একবার বলেছিলেন, 'কোনও কনফিউশন নেই বলা যাবে না। আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। মানুষকে বোঝাচ্ছি।'


সিপিএমের রাজ্য় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে এরাজ্য়ে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে আরও বেশি করে প্রচারে নামতে হবে। কিন্তু তাতে কি ক্ষত সারানো যাবে? বোঝা যাবে আগামী লোকসভা ভোটেই।


আরও পড়ুন: বহু আলোকবর্ষ দূরের গ্রহে সমুদ্র, মিথেন আর? কী খোঁজ পেল নাসা?