জাতি-ধর্ম না দেখে সমাজসেবামূলক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর লাগাতার অত্যাচারের প্রতিবাদে, গর্জে উঠেছিলেন। গত শুক্রবার এক সমাবেশের ডাকে জড়ো করেছিলেন চার লক্ষ মানুষকে। আর এর পরই দেড় মাস আগের রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলাদেশের ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। আদালতে জামিন না পাওয়ায়, এখন জেলেই কাটাতে হচ্ছে তাঁকে। তাঁর মুক্তির দাবিতে গর্জে উঠেছে ভারতের মানুষও। প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হয়েছে আমেরিকা ও ব্রিটেনেও। এরই মধ্যে একাংশের দাবি ধৃত সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের পাশে নেই ইসকন, তাঁরা নাকি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই জল্পনার মধ্যেই চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিন ধর্মীয় সংগঠন ইসকন।
ইসকন স্পষ্টতই জানাচ্ছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অধিকার এবং স্বাধীনতাকে সমর্থন জানানো থেকে কোনওভাবেই সরে যাচ্ছে না ইসকন। বরং বাংলাদেশে হিন্দুদের এবং তাদের উপাসনালয়গুলিকে রক্ষার জন্য চিন্ময়দাসের শান্তিপূর্ণ আহ্বানকে সমর্থনই জানাচ্ছে তারা। জানানো হয়েছে অফিসিয়াল বিবৃতিতে।
আমরা অন্যান্য সকল সনাতানী সংগঠনের মতোই হিন্দুদের সুরক্ষা, নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তিত। বাংলাদেশে এবং সংখ্যালঘুদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিকে সমর্থন করি। আমাদের ইতিমধ্যে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রেস বিবৃতি এবং সাক্ষাৎকারে ইসকনের অবস্থান সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করা হয়েছে। আমরা কেবলমাত্র স্পষ্ট করে দিয়েছি, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ইসকনের প্রতিনিধিত্ব করেন না।
কেন এই ভাবে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান বোঝাতে হল ইসকনকে? আসলে বিভ্রান্তির সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশ ইসকনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চিন্ময়কৃষ্ণ ইসকনের প্রতিনিধি নন। সঙ্গে সঙ্গে চর্চা শুরু হয়, তাহলে কি ধৃত সন্ন্যাসীর থেকে দূরত্ব বাড়াতে চায় ধর্মীয় সংস্থা ? ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক, চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের কোনও বক্তব্য বা কর্মের জন্য ইসকন দায়ী নয়। তিনি দাবি করেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সংগঠনের নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সংগঠনের সব পদ থেকে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, বেশ কয়েক মাস আগে, প্রবর্তক শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরের প্রধান লীলারাজ গৌর দাস, গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রামের শ্রী শ্রী পুণ্ডরীক ধামের প্রধান চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে পদ থেকে এবং ইসকনের সমস্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অপসারণ করা হয়। চারু চন্দ্র দাস আরও বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই একাধিক প্রেস কনফারেন্স এবং সরকারি ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা পরিষ্কার করেছি। দুঃখের বিষয়, কিছু গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের সংস্থা সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে এবং ইসকনকে নিষিদ্ধ করার জন্য অযৌক্তিক দাবি করছে।" প্রশ্ন ওঠে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার মামলা উঠতেই কি চিন্ময়দাসের পাশ থেকে সরে গেল তারা ?
না। চিন্ময়কৃষ্ণের পাশেই আছে তারা। জানাল ইস্কন। শুধু স্পষ্ট করা হল, তিনিই ইসকন-বাংলাদেশের হয়ে আনুষ্ঠানভাবে প্রতিনিধিত্ব করছেন না।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে