কলকাতা: যাদবপুরে র‍্যাগিং (Ragging in Jadavpur University) নিয়ে ফের সরব অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। অন্তর্বর্তী উপাচার্যর নিশানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র পড়ুয়াদের একাংশ। পড়ুয়াদেরই একাংশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বুদ্ধদেব সাউ।


তিনি বলেছেন, 'বন্ডিংয়ের নামে র‍্যাগিংকে জিইয়ে রাখতে চাইছে কিছু ছাত্র। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররাও সিনিয়রদের ভয় পাচ্ছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদেরও র‍্যাগিং হচ্ছে। প্রত্যেক বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য পৃথক হস্টেলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হচ্ছে।' প্রসঙ্গত, ছাত্রমৃত্যুর পর পুলিশের সঙ্গে তদন্তে সামিল হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটি। যদিও এতকিছুর পরেও কয়েক বিষয়ে ওঠে বিতর্কের ঝড়। ফের সামনে আসে সেই নিরাপত্তার বিষয়টিই। একাধিকবার সামনে আসে যাদবপুর ক্যাম্পাসে ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ও নজরদারির অভাবের ছবিটাই।


সম্প্রতি ক্যাম্পাসে দেখা গিয়েছিল, ২০-২২ পুরুষ ও মহিলা সেনার আদলে পোশাক পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয় অরবিন্দ ভবনের সামনে। তারা কারা সেই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কীভাবেই বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারলেন? কেন গেটে আটকাল হল না? পরে জানা যায়, এরা সকলেই এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটি নামে এক বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি।


সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে তাঁরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। এবার সেনারো পোশাক পরে ক্যাম্পাসে ঢোকা বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে নোটিস দিয়েছিল পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও বেশকিছু নথি। পাশাপাশি তলব করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টসকে। যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর পর ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ে বারবার বিতর্ক উঁকি দিয়েছে।


তবে সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস-এর জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাত ১০ টার পর হস্টেলের বাইরে থাকতে পারবেন না পড়ুয়ারা। যদি কোনও পড়ুয়া রাত ১০ টার পর হোস্টেলের বাইরে থাকেন, সেক্ষেত্রে হোস্টেল সুপারের থেকে নিতে হবে ছাড়পত্র। পাশাপাশি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে হস্টেলের গেট। হস্টেলে অনুপস্থিত থাকলে লাগবে সুপারের অগ্রিম অনুমতি। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ, হোস্টেলে আগত ভিজিটরদের পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক, রেজিস্টারে লিখতে হবে নাম ঠিকানা, ফোন নম্বর। সঙ্গে আবাসিক পড়ুয়াদেরও হস্টেলের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে সাফ উল্লেখ, প্রয়োজনে হোস্টেলের বোর্ডারদের থেকে তাঁদের কার্ড দেখতে চাইলে তা দেখাতে হবে। 


আরও পড়ুন, 'টাকা যেত খাদ্যমন্ত্রী হয়ে ভাইপোর কাছে..', রেশন দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু


তবে বিস্তর তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) গতমাসে এসে পৌছয় সিসি ক্যামেরা।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২৯ টি সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আপাতত শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটেই  সিসি ক্যামেরার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে আছে ৬টি অত্যাধুনিক এএনপিআর ক্যামেরাও। এএনপিআর ক্যামেরায় যে কোনও গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকলে তার নম্বর প্লেটের ছবি উঠবে। এছাড়া ২১টি  হাইএন্ড বুলেট ক্যামেরাও বসানো হচ্ছে। সিসিটিভি মনিটরিং-এর  জন্য তৈরি হয়েছে সার্ভার রুমও।