দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে, চলে গেছে প্রাণটাই।  কয়েক বছরের জন্য যে হস্টেল দ্বিতীয় ঘর হয়ে ওঠার কথা ছিল, অভিযোগ সেখানেই দাদা-দের ভয়ঙ্কর অত্যাচারে প্রাণ চলে গেছে নদিয়ার পড়ুয়ার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই লজ্জাজনক ঘটনাকে এবার, আদালতে বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা বললেন বিশেষ সরকারি আইনজীবী।

মঙ্গলবার, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত সৌরভ চৌধুরী, মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্তকে আলিপুর আদালতে তোলে পুলিশ। বিশেষ সরকারি আইনজীবী গোপাল হালদার বলেন, ' গোটা ঘটনার কিংপিন হচ্ছেন সৌরভ। এক ছাত্রের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাতে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট পাওয়া গেছে। ওই চ্যাট দেখলেই বোঝা যাবে, তাঁরা নিজেদের মধ্যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপে একটা গ্রুপ খোলা হয়েছিল। তাতে একটি মেসেজ ছড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছিল, যে সৌরভ হস্টেলে থাকতেন না, মাঝমধ্যে আসতেন, তাঁর মায়ের শরীর খারাপ। এখানেই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল, বলে দাবি করেন বিশেষ সরকারি আইনজীবী। সৌরভকে বাঁচাতেই হোয়াটস্যাপ ওই গ্রুপ কে খুলেছিল, সেটাও জানতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।'



ধৃত সৌরভ চৌধুরীর আইনজীবী এদিন আদালতে দাবি করেন, ' ১১ দিন ধরে তাঁর মক্কেলকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। অথচ কেস ডায়েরিতে তাঁর বিরুদ্ধে তেমন কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তাই তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানো হোক।' 

'আমি কোনও অপরাধী নই। অপরাধী সাজানো হয়েছে', ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত সৌরভ চৌধুরী। 

ধৃত মনোতোষের আইনজীবী সওয়ালে বলেন, তাঁর মক্কেল ওই ছাত্রকে হস্টেলে রেখেছিল, FIR-এ সেটাই উল্লেখ আছে। তাঁর বিরুদ্ধে র‍্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগ নেই। তাঁর মক্কেলও র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন, দীপশেখরের আইনজীবী। পাশাপাশি ছাত্র মৃত্যুর সঙ্গে দীপশেখরের কোনও যোগ নেই বলেও দাবি করেন তিনি। এদের পাল্টা, বিশেষ সরকারি আইনজীবী গোপাল হালদার বলেন, এরা নিজেরা র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে, র‍্যাগিং করে মারার অধিকার তাঁদের নেই। এদিন ধৃত দুজনের আইনজীবী দাবি করেন, মনোতোষ এবং দীপশেখর পড়াশোনায় ভাল, তাই কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হোক।

যার পাল্টা হিসেবে বিশেষ সরকারি আইনজীবী গোপাল হালদার বলেন, কীসের জন্য কাউন্সেলিং প্রয়োজন? জামিন পেতেই এসব বলা হচ্ছে। এতদিন তো ওনারাই কাউন্সেলিং করতেন। সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর, ধৃত তিনজনকে ফের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, শুধু ১৩ জন নয়, আরও অনেকে থাকতে পারে, অভিযুক্তদের জেরা করে জানার চেষ্টা করছে।