আবির দত্ত, সৌমিত্র রায় ও বিটন চক্রবর্তী, কলকাতা : পরিচয় পর্বের নামে র্যাগিং হয়েছে! নতুনদের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ( Jadavpur University Student Death ) ছাত্রমৃত্যুর দেড় মাসের মাথায়, অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এই সমস্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য। (JU Student Death)
গত ৯ অগাস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় নদিয়ার এক পড়ুয়ার। উঠে আসে র্যাগিং-এর অভিযোগ! ঘটনায় বর্তমান পডুয়া ও প্রাক্তনী মিলিয়ে গ্রেফতার হয় ১৩ জন। ঘটনায় দেড় মাস পর অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরিচয় পর্বের নামে র্যাগিং হয়েছে। ভর্তির পর ১২ থেকে ১৪ মাস ধরে চলে পরিচয়ের নামে র্যাগিং। হস্টেলের A2 ব্লক থেকেই র্যাগিংয়ের অভিযোগ বেশি আসত। হস্টেল সুপার ভয়ে ওই ব্লকে যেতেন না। (JU Ragging)
ছোট করে চুল কাটা, সবসময় ফুলপ্য়ান্ট পরার মতো নির্দেশিকার পাশাপাশি সিনিয়রদের সামনে ফোন করা যাবে না, এমনই কিছু হুকুম জারি ছিল নতুনদের উপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ৯ অগাস্ট, বিকেল ৪টে থেকে সাড়ে ৪টা নাগাদ সাউথ সিটির পাশে একটি চায়ের দোকানে নদিয়ার ওই পড়ুয়াকে নিয়ে যান প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী। এরপর, সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ পড়ুয়াকে মেন হস্টেলের ৫৯ নম্বর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। পাশের পুলিশ কোয়ার্টারে মহিলাদের দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বলা হয়। জোর করে তা করানোর পর, পুলিশ এসে তাকে ধরবে বলে ভয় দেখান সৌরভ। এরপর ১০৪ নম্বর রুমে নদিয়ার পড়ুয়াকে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় র্যাগিং। জোর করে চিঠিতে সই করানো, নগ্ন হয়ে বারান্দায় ছোটা-সহ ৯ অগাস্ট সন্ধে থেকে রীতিমতো টাইমলাইন ধরে ধরে ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে। খুন হতে পারে, আবার মৃত্যুর নেপথ্যে প্ররোচনাও থাকতে পারে বলে মনে করছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। 'পরিচয় পর্বের নামে র্যাগিং হয়েছে', যাদবপুরকাণ্ডে রিপোর্ট অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির অব্যাহত রাজনীতি। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) জানিয়েছেন, ' যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যর উচিত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া। আচার্যর যা ক্ষমতা আছে দেশবিরোধী টুকরে টুকরে গ্যাঙ এবং মদ গাজা চরস আফিমের গ্যাঙকে ক্র্যাকডাউন করতে হবে। দেশবিরোধী খালিস্তানিদের মতো করতে হবে।'
মদন মিত্রের পাল্টা কটাক্ষ, ' ওর স্কুল ঠিক আছে। যাদবপুর ওসব বোঝে না তো। আইআইটি এসব নিয়ে ওর না বলাই ভাল। ' বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে, একাধিক ছাত্রের বিরুদ্ধে FIR-এর সুপারিশ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, হস্টেল সুপারের গাফিলতিও ছিল। এক মাসের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করা যেতে পারে বলে, সুপারিশ অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। অ্যান্টি র্যাগিং-এর ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলকে।