কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: রাজভবনে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের সঙ্গে রাজ্যপালের (Jagdeep Dhankhar) সাড়ে তিন ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক।অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ অর্থ বিল বা রাজ্য বাজেট-সহ একাধিক বিলে রাজ্যপালের অনুমোদন নিয়ে জটিলতা কাটল।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া দুই বিলে (WB Appropriation Bill, WB Finance Bill 2022) রাজ্যপালের অনুমোদন মিলবে বলে রাজভবন সূত্রে খবর।
আইনশৃঙ্খলা থেকে প্রশাসন, শিক্ষা থেকে সফর, বারবার তৃণমূল সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সম্প্রতি রাজ্য বাজেট ঘিরেও রাজভবন আর নবান্নের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ১১ মার্চ বিধানসভায় বাজেট পেশ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বাজেট আসলে এক ধরনের অর্থ বিল। কোনও আর্থিক বছরে সরকার কোন খাতে কত টাকা খরচের প্রস্তাব দিয়েছে, মূলত তারই রূপরেখা দেওয়া হয় বাজেটে। এই অর্থ বিলে রাজ্যপালের সইয়ের পরই তা আইনে পরিণত হয়।
কিন্তু তৃণমূল সূত্রে দাবি, বাজেট পেশের পর ১৯ দিন কেটে গেলেও অর্থ বিলে সই করেননি রাজ্যপাল! এ দিকে ৩১ মার্চ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার চলতি আর্থিক বছর শেষ হচ্ছে।পয়লা এপ্রিল থেকে শুরু হবে নতুন অর্থ বর্ষ। তার আগে রাজ্যপাল যদি অর্থবিল অর্থাৎ বাজেটে সই না করেন, তাহলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: Mamata On Rampurhat : 'রামপুরহাটকাণ্ড বিজেপির বড় ষড়যন্ত্র' , প্রশ্ন তুলে তোপ মমতার
এই আবহে এদিনই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবকে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। সেই মতো বুধবার বিকেলে রাজভবনে যান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থ!উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়। শেষে বৈঠকের ছবি ট্যুইট করে জগদীপ ধনকড় লেখেন, মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের সঙ্গে আলোচনা এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া সাংবিধানিক সম্মতিগুলি কার্যকর করার মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পর অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল (২টি) এবং পশ্চিমবঙ্গ অর্থ বিলে (রাজ্য বাজেট) সাংবিধানিক সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
তবে দীর্ঘ এই গড়িমসি নিয়ে সম্প্রতিই রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বলেন, “উনি তো লাটসাহেব। সবকিছুতেই বাধা দেওয়া..হাতে এখনও ২ দিন আছে দেখা যাক।” যদিও শেষমেশ অর্থ বিলে রাজ্যপালের সম্মতি মেলায় আরও একবার সাংবিধানক সঙ্কট এড়ানো গেল বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।