সনত্‍ ঝা, জলপাইগুড়ি: রীতিমতো প্লট করে বিক্রি করা হচ্ছিল নদীর চর। দখল করা সরকারি জমি চড়া দামে বিক্রি করতে নদীর ওপর তৈরি করা হয়েছিল অবৈধ লোহার সেতু। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ঠাকুরনগরে এভাবেই চুরি হচ্ছিল সাহু নদীর (Sahu River) চর। গত মাসের ২১ তারিখ বেআইনি লোহার সেতু ভেঙে দেয় প্রশাসন। এবিপি আনন্দর (ABP Ananda) খবরের জেরে শুক্রবার সেচ দফতরের (Irrigation Department) তরফে ভেঙে দেওয়া হল সেতুর পাশে তৈরি হওয়া বেআইনি পাড়। সম্প্রতি নদীর চর দখল নিয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee)। কিন্তু সবার চোখের সামনে কী করে তৈরি হল এমন সেতু? সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ার পর কেন টনক নড়ল প্রশাসনের? এসব প্রশ্ন তোলেন এলাকার বাসিন্দারা। গত ২২ এপ্রিল এবিপি আনন্দে সম্প্রচারিত হয় এই খবর। বুধবার ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন (Ghantakhanek Sange Suman) অনুষ্ঠানেও উঠে আসে নদীর চর বিক্রির খবর। এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বেআইনি জমি দখলের অভিযোগে ধরপাকড় শুরু করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট (Siliguri Police Commissionerate)। 


পাড় ভাঙল প্রশাসন


বিন্নাগুড়ি ও ডাবগ্রাম ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধানকে সামনে রেখে এদিন পাড় ভাঙার কাজ চালায় সেচ দফতর। এ বিষয়ে বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শশীচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘নদীর ভাঙা হবে বলে আমাদের জানানো হয়। কারা করেছিল জানতাম না। বিডিও জানার পর সেচ দফতর থেকে এসে ভেঙে দেয়।’


ডাবগ্রাম ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সুধা সিংহ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘কী করে বেআইনি পাড় তৈরি হচ্ছিল জানতাম না।’


বিজেপি-তৃণমূল তরজা


নদীর চর দখল নিয়ে শাসক দলকেই নিশানা করেছে বিজেপি। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘নিজেদের মধ্যে ঈর্ষার লড়াই। এক জায়গায় ভাঙা হয়েছে। গোটা এলাকাই তো দখল হয়েছে। সবই তো তৃণমূল নেতা। যাদের ধরা হচ্ছে, তারা সাধারণ খেদে খাওয়া মানুষ। আসলদের ধরা হচ্ছে না। সবাই তৃণমূল। জমি মাফিয়াকে আড়াল করতেই সাধারণ মানুষকে আটক করছে।’


পাল্টা ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি সাংগঠনিক ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সাগর মোহন্তর বক্তব্য, ‘এইভাবে যেভাবে পাড় দখল করা অন্যায়। যেভাবে ঝোড়া, নিকাশি নালা দখল হয়ে যাচ্ছে, তাতে বর্ষাকালে এরাই বিপদে পড়বে। যারা এসব করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’