রাজা চট্টোপাধ্যায়, রাজগঞ্জ: অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকায় ব্যাঘাত অনলাইন পড়াশোনায়। স্কুলের উদ্যোগে পড়ুয়াদের দুয়ারে শিক্ষকরা পৌঁছে যাচ্ছেন। গতকাল, এমন ঘটনা সামনে এসেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে। করোনা মহামারীর আঁধারে যেন মানবিকতার আলো জ্বালাচ্ছেন নারায়ণগড় রাজা হৃষিকেশ লাহা উচ্চ শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষকরা। আর এবার একই কর্মযজ্ঞে সামিল হলেন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের একটি স্কুলের শিক্ষকরা। করোনা আবহে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে বন্ধ সশরীরে পঠনপাঠন। এই পরিস্থিতিতে, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে, গ্রামে গ্রামে গিয়ে ক্লাস নেওয়া শুরু করলেন তাঁরা।
নিজদ্বারে বিদ্যালয়। স্কুল ভবনের বাইরে এ এক অন্য পাঠশালা। গ্রামে গ্রামে আসছেন শিক্ষকরা।মাটিতে বসেই চলছে পঠনপাঠন। করোনা আবহে ২০২০-র ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ রাজ্যের স্কুলগুলি। পঠনপাঠন প্রায় বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে, জলপাইগুড়িতে পড়ুয়াদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। মনুয়াগঞ্জ, মৌলানিগছ, সহদইপাড়া, জয়ন্তি কলোনি প্রভৃতি গ্রামে গ্রামে গিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন রাজগঞ্জের হরিহর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
রাজগঞ্জের হরিহর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান মনোজিৎ পাল বলেন, করোনা আবহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকা দের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ নেই। প্রচুর পড়ুয়া স্কুল ছুটও হয়ে যাচ্ছে । তাই পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করেই স্কুলের উদ্যোগে নিজদ্বারে বিদ্যালয় কর্মসূচি নেওয়া হল। শিক্ষকদের এই উদ্যোগে খুশি পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকরা। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, পুজোর আগে পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। এরপর, পরিস্থিতি বুঝে ফের পরবর্তী কর্মসূচির কথা ভাবা হবে।
অন্যদিকে, নারায়ণগড় রাজা হৃষিকেশ লাহা উচ্চ শিক্ষা নিকেতনের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র নিয়ে পড়ুয়াদের বাড়িতে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। বাড়ি থেকেই উত্তরপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গাইড করছেন সিলেবাস সম্পর্কে। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এই স্কুলে এগারোশো জন পড়ুয়া রয়েছে। সম্প্রতি অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে তাদের জন্য। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকায় অনেকেই সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই, তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। আর শিক্ষকদের এভাবে পেয়ে আপ্লুত পড়ুয়ারা।