রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : আমার কোম্পানি ভাল, প্রোডাক্ট ভাল, আমাদের জিনিস ভাল, আমাদের ফেরিওয়ালায় গন্ডগোল। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) তৃণমূল নেতার (TMC Leader) মন্তব্য়ে শাসকের অন্দরেই অস্বস্তি। বিজেপি তো প্রথম থেকেই বলে তৃণমূল একটা কোম্পানি। একজন সিইও। বাকিরা এজেন্ট। পাল্টা কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। 


নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জেলবন্দি রয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক। এরই মধ্যে রাজ্যজুড়ে উঠেছে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ। জেলায় জেলায় জারি রয়েছে বিক্ষোভ। মানুষের অভাব অভিযোগ মেটাতে, দিদির সুরক্ষাকবচের মতো কর্মসূচি চালু করেছে তৃণমূল। অভিযোগ শুনতে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছেন দিদির দূতরা। জনসংযোগ বাড়াতে দল যখন নেতা-মন্ত্রীদের এইভাবে ময়দানে নামিয়েছে, তখন দলের একাংশকেই নিশানা করলেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতা ও SC-ST OBC সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস।


রবিবার, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাতকাটায় একটি সভায় তিনি বলেন, আমার কোম্পানি ভাল, প্রোডাক্ট ভাল, কিন্তু ফেরিওয়ালায় গন্ডগোল।


জলপাইগুড়ির তফশিলি জাতি উপজাতি OBC সেলের সভাপতি ও তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস বলেন, আমাদের নেতা অনেক। পোস্ট পেয়ে আমি ব্লক সভাপতি, আমিই জেলা সভাপতি, আমিই জেলা সম্পাদক চেনেন আমাকে ? এক মিনিটে চাকরি খেয়ে নেবো, এক মিনিটে বলে চাকরি খেয়ে নেবে। এই হয়েছে অবস্থা। বলছে, আমি তৃণমূলের বড় নেতা, আমি অমুক পদে আছি... এরাই তৃণমূল কে দুর্বল করছে।

দলের একাংশকে নিশানা জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতার। এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, উনি সুপারভাইজারের দায়িত্ব নিতে চাইছেন। কিন্তু, কিছুদিনের মধ্যেই ওঁর চাকরিটা কাঁচি হয়ে যাবে। উনি সত্যি কথা বলে ফেলছেন। থাকতে পারবেন না এই দলে। উনি যদি সরাসরি এই ধরনের মানুষ হন, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসটা ওঁর জায়গা নয়। উনি আগে ওখান থেকে ছেড়ে চলে যান। তাহলে কিছু একটা বার্তা যেতে পারে। 


সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "কে জলপাইগুড়ির কোন নেতা কী বলছেন, তাঁকে কী বলতে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথারই কোনও মূল্য থাকছে না। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সততার প্রতীক। এখন আর বলতে পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন কোথাও কোনও দুর্নীতি হবে না। কাটমানি বন্ধ করে দেব, তা মানা হচ্ছে না। ওঁর নেতারা বলছেন, জিরো টলারেন্স, লোকে দেখছেন, জিরো ইনটলারেন্স।"  

আঠারোর পঞ্চায়েত ভোটে, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ, ৯টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭৬টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল।
বিজেপির হাতে থাকে মাত্র ৪টি। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হবে, উত্তর মিলবে কয়েক মাস পরই।