রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের কাজে ঠিকাদারদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেটরাজ চলছে। মদত রয়েছে দলেরই একাংশের। জলপাইগুড়িতে বিস্ফোরক দাবি তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপ প্রধানের। যদিও জেলা সভানেত্রীর দাবি, দলে কোনও কোন্দল নেই।
স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও উন্নত করতে জলপাইগুড়িতে তৈরি হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু সেই কাজেও সিন্ডিকেটের রমরমা কারবার। যে অভিযোগকে কেন্দ্র করে, তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপ প্রধানের সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়ালেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, ঠিকাদারদের কাজে বাধা ও সিন্ডিকেটরাজ চলার পিছনে দলেরই একাংশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন তৃণমূল নেতা।
জলপাইগুড়ির বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও উপ প্রধান কৃষ্ণ দাসের কথায়, সিন্ডিকেটরাজ কাজ করছে। কে বা কারা ইচ্ছাখুশি রেট দিতে হবে, এটা তীব্র বিরোধিতা করছি। এখানে গুন্ডাগিরি করতে দেব না। আমাদের কিছু লোকেরা ও নেতার মদত আছে সেটা পরিষ্কার।
২০২০ সালে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালকে, মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার ঘোষণা করা হয়। সেই অনুযায়ী, টিবি হাসপাতাল পাড়ায় তৈরি হচ্ছে অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং। বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান কৃষ্ণ দাসের অভিযোগ, সেখানে ঠিকাদারদের কাজে বাধা দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
রমরমিয়ে চলছে সিন্ডিকেটরাজ। এই অভিযোগ পেয়েই প্রজেক্ট এরিয়ায় গেছিলেন তৃণমূল নেতা। সেই সময়ই বাপি প্রধান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।
জলপাইগুড়ির বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও উপ প্রধান কৃষ্ণ দাস আরও বলেছেন, কয়েকদিন ধরেই আমাকে এজেন্সির লোক আমাকে অভিযোগ জানাচ্ছিল। ৫০ টাকা বেশি লাগবে বলে হেনস্থা করছিল। এটা করতে দেওয়া যাবে না, প্রশাসনকেও জানিয়েছি। যারা এগুলি করছে, তারা সামনে আসুক, কাজ আটকে দেখাক।
বারোপেটিয়ার বাসিন্দা বাপি প্রধানের কথায়, বলা হচ্ছে লোকাল ছেলেরা কাটমানি খাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করা হোক। আমি কোনও নেতা নই, বলতে গিয়ে হেনস্থা হয়েছি। এখানে গেম চলছে। আমি পার্টি নিয়ে কোনও কথা বলব না।
জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর বলেছেন, প্রবাদ আছে কাক কাকের মাংস খায় না, তৃণমূল এমন একটা পার্টি, টাকার জন্য নিজেদের লোককেই খুন করবে। মেডিক্যাল কলেজের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের বিজেপি সাংসদ, আর তৃণমূল লুটেপুটে খাচ্ছে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। যত দিন এগিয়ে আসবে, প্রতিদিন তৃণমূল নেতারা খুন হবেন। ভাগের লড়াই এটা।
জলপাইগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মহুয়া গোপের কথায়, এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই। শ্রমিক সংগঠনের নেতার আছেন, তারা বিষয়টি দেখবেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ২০২৪ সালে জলপাইগুড়ি মেডক্যাল কলেজ হাসপাতাল চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবন তৈরির কাজে যেভাবে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে, তারপরও নির্ধারিত সময়ে মেডিক্যাল কলেজ চালু হবে তো? সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা।