সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: শহরের একাধিক জায়গায় চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নার বিরোধিতা করে হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। প্রতিবাদকে দুর্ভোগ বানানো যায় না, দাবি মামলাকারী আইনজীবীর। শুনানি শেষ হলেও, রায়দান স্থগিত রেখেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।  


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলছে, চাকরির দাবিতে লাগাতার চলছে ধর্না-অবস্থান। কখনও বিকাশ ভবন অভিযান করছেন আন্দোলনকারীরা! কখনও করুণাময়ীতে পর্ষদের অফিসের সামনে ধর্না-ধুন্ধুমার। এই প্রেক্ষাপটেই, ধর্নার বিরোধিতায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। আবেদনে উল্লেখ ছিল - প্রতিবাদকে দুর্ভোগ বানানো যায় না। ট্রাফিকের সমস্যা তৈরি হতে দেওয়া যায় না।


মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার তাঁর আবেদনে অভিযোগ করেন, মেয়ো রোড, বিকাশ ভবন-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ধর্না চলার ফলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়ছেন।১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে করুণাময়ীতে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলেছে। সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবেদনে এই সওয়াল করে মামলাকারীর যুক্তি প্রতিবাদকে দুর্ভোগ বানানো যায় না। ট্রাফিক সমস্যা তৈরি হতে দেওয়া যায় না। সোমবারই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি। 


উল্লেখ্য, গতকাল মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে চাকরিপ্রার্থীদের বসতে নিষেধ পুলিশের। আন্দোলনকারীদের মেল করে অবস্থানে না বসার কথা জানাল ময়দান থানা। শহিদ মিনার চত্বরে কাল গুরু নানকের জন্মদিন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখ করে এই নিষেধাজ্ঞা, বলে জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার কারণ তুচ্ছ অজুহাত, ট্যুইট শুভেন্দু অধিকারীর। আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে সরকার, আক্রমণ সুজন চক্রবর্তীর। আন্দোলনকারীদের উস্কানি দিচ্ছে বিরোধীরা, প্রতিক্রিয়া শান্তনু সেনের।


তবে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা মেনে ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে গতকাল ধর্না কর্মসূচি স্থগিত রাখেন চাকরিপ্রার্থীরা। ধর্নামঞ্চে এ দিন পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে। আজ শহিদ মিনার চত্বরে গুরু নানকের জন্মদিন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান রয়েছে। আন্দোলনকারীদের মেল করে অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ময়দান থানা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখ করে এই নিষেধাজ্ঞা বলে ই মেলে উল্লেখ করা হয়। বারবার কেন বাধা? এই প্রশ্ন তুলেও আজ ধর্না কর্মসূচি স্থগিত রাখেন চাকরিপ্রার্থীরা। আগামীকাল থেকে ফের ধর্নায় বসবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। চাকরিও দেয় না, ধর্নায় বসতেও দেয় না। আন্দোলনকারীরা সরকারের চোখের বালি, মন্তব্য দিলীপ ঘোষের।


সুপ্রিম কোর্টে মামলার নিষ্পত্তির আগেই, ২৬৮ জনের চাকরি বাতিলের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। চিঠি পাঠানো হল জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলগুলিকে। পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।