রাজা চট্টোপাধ্য়ায় ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : জোশীমঠকে বসবাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। জোশীমঠে যখন রোজ মাটি ধসে, ফাটল দেখা যাচ্ছে রাস্তায়। তখন এই দৃশ্য ভয় ধরাচ্ছে দার্জিলিং-এর পরিস্থিতি নিয়েও। দার্জিলিং পুরসভা সূত্রে খবর, সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৩৯টি অবৈধ নির্মাণ শনাক্ত করা হয়েছে।


জোশীমঠের পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ বাড়ছে দার্জিলিংকে ঘিরেও। কারণ, জোশীমঠের মতো সেখানেও হয়ে চলেছে অজস্র নির্মাণকাজ। এনিয়ে ক্ষোভ আর আক্ষেপ আছড়ে পড়েছে স্থানীয়দের গলায়। দার্জিলিং-এ একটা বড় ভূমিকম্প হলে, জোশীমঠের চেয়েও ভয়ঙ্কর বিপর্যয় হবে, আশঙ্কাপ্রকাশ করছেন ভূবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা। 


ভূবিজ্ঞানী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, 'দার্জিলিংয়ে ভূমিকম্প হলে প্রচুর মানুষের প্রাণহানি হবে। এটা ওয়ান অফ দা হায়েস্ট ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। আমি কালিম্পং এ দীর্ঘদিন কাজ করেছি সেখানে দেখেছি যে পুরনো ল্যান্ডস্লাইড এর উপরে কনস্ট্রাকশন হচ্ছে। সেটা এখন হয়তো তারা বোঝে না যে লান্সফ্লাইড হয়েছিল তার ফলে সেখানে যদি আর্থকুয়েক সিস্টেমগুলো রিঅ্যাক্টিভেটেড হয় তাহলে কিন্তু প্রচুর জনজীবনের প্রাণহানি হবে। আমার ধারণা দার্জিলিং আরও বেশি জনবহুল এলাকা জোশীমঠের থেকে।' 


 পরিবেশবিদ প্রদীপ শিকদার  জানাচ্ছেন, ' দার্জিলিং ভূমিকম্প প্রবণ। দার্জিলিং-এর ক্ষেত্রে ইকোলজিক্যাল ধারণ ক্ষমতা নির্ধারণ করে আর্বানাউজেশনের প্ল্যানিং করতে হবে। ইমিডিয়েট নির্মাণ বন্ধ করা দরকার। কত লোক প্রতিবছর যেতে পারে তার জন্য ইকোলজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। ' 


''দার্জিলিং বহুতলের উপযোগী নয়। যোশীমঠের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে'' মনে করছেন ভূবিশেষজ্ঞ ও বিভাগীয় প্রধান (ভূগোল, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়) রঞ্জন রায়। 


অন্যদিকে, দার্জিলিং-এ বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পুরসভাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন হামরো পার্টি পার্টির প্রধান। এবার পুরসভার ঘাড়েই দায় চাপালেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী। অবৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি বহুতলের অনুমতি দেবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন সদ্য দার্জিলিং পুরসভার বোর্ড দখল করা ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রধান অনীত থাপা। দিনকয়েক আগেই দার্জিলিং-এ বেআইনি নির্মাণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন হামরো পার্টি পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড। পরিস্থিতির জন্য কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছিলেন পুরসভাকে। 


বর্ষায় ধস নিত্য সঙ্গী। তারপরও ফিরছে না হুঁশ। আর কোন বিপর্যয় ঘটলে সতর্কতা ফিরবে? বন্ধ হবে অবৈধ নির্মাণ। প্রশ্ন তুলছে দার্জিলিং।