কলকাতা: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর এজলাস থেকে। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Ganguly) নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম নির্দেশেকে যখন শাসকদলের শীর্ষ নের্তৃত্ব 'স্বাগত' জানিয়েছেন, তেমনই পাশাপাশি 'এই রায় দুর্ভাগ্যজনক' জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর এবার মুখ খুললেন বামেদের বর্ষীয়ান নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। নাম না করে 'পিসি এবং ভাইপোকে' তীব্র আক্রমণ। ট্যুইটে তিনি বলেন, 'চোরেদের জেলে যেতেই হবে।'


মূলত সুপ্রিম নির্দেশের পর ট্যু্ইট করে সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সুপ্রিম নির্দেশে খুশি এরাজ্যের চাকরি বিক্রির..লুঠেরার দল। যোগ্য বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা চোখের জল ফেলছে। এই সবই সাময়িক। দুর্নীতিতন্ত্রের বিরুদ্ধে যোগ্য বঞ্চিতদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে, তেজ আরও বাড়বেই। চোরেদের জেলে যেতেই হবে, পিসি-ভাইপোর বাহিনী অপেক্ষায় থাকুক।' প্রসঙ্গত, রাজ্যের এতদিন ধরে চলে দুর্নীতির মামলারগুলির মধ্যে অন্যতম নিয়োগ দুর্নীতির মামলা।  একের পর এক শাসকদলের হেভিওয়েট নাম জড়িয়েছে। এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে, রাজ্যের খোদ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের। এই মামলার জেরেই চাপ বেড়েছে শাসকদলের অন্দরে। এতদিন ধরে চলে আসা নিয়োগ দুর্নীতির মামলা বেগ পায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।  


সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) মামলায় উঠে এসেছে এবিপি আনন্দকে দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ। তাঁর নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। বিচারপতির সাক্ষাৎকার নিয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।


এসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে এনিয়ে মুখ খোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। মঙ্গলবার এজলাসে এসে তিনি আচমকা বলেন, কে রটাচ্ছে আমি পদত্যাগ করছি? আমি পদত্যাগ করছি না। এরপর আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, যে লড়াই শুরু হয়েছে , সে লড়াই চলবে। বিভিন্নভাবে লড়াই চলবে। আমি তো চিরকাল এখানে থাকব না, কিন্তু লড়াই চলবে।


আরও পড়ুন, গুণের 'খনি', কিন্তু কখন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কমলা লেবু ?


আরও পড়ুন, তাজা নাকি ফ্রিজের সবজি ? কোনটা উপকারী ?


গত ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য় করেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত CBI, ED-র। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল, সুপ্রিম নির্দেশের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,  'আমি আগেও বলেছি হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের যে কোনও রায় আমাদের কাছে শিরোধার্য। সম্পূর্ণ আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস ভারতবর্ষের বিচার ব্যবস্থার উপর রাখি। যেহেতু এটা সাবজুডিস ম্যাটার তাই, আমি এই নিয়ে কোনও মন্তদব্য করতে চাই না। মহামান্য বিচারপতি যে রায় দিয়েছেন, আমরা সেই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।'