কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের ১ কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। কলকাতা হাইকোর্টের ডেপুটি শেরিফের হাতে তুলে দেওয়া হল অভিযুক্ত ওই কর্মীকে। আজই রেজিস্ট্রার ভিজিলেন্স-এর সামনে হাজির করানোর নির্দেশ। প্রয়োজনে স্বপন জানা নামের ওই কর্মীকে গ্রেফতার করে তদন্ত করবে পুলিশ, নির্দেশ বিচারপতির। ২০০৯ সালে স্কুলে গ্রুপ-ডি কর্মীর নিয়োগের জন্য পরীক্ষা দেন বেহালার বাসিন্দা হরেকৃষ্ণ রঞ্জিত নামে ১ জন দৃষ্টিহীন ব্যক্তি। যদিও তিনি চাকরি পাননি বলে অভিযোগ।


'তাঁরই প্রতিবেশী কলকাতা হাইকোর্টের কর্মী স্বপন জানা তাঁকে বলেন যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দিলে চাকরি হয়ে যাবে। কিন্তু তার জন্য মামলা করতে হবে', এমনটাই আদালতে অভিযোগ দায়ের। 'মামলা করার জন্য ২০১৭ এবং ২০২২ সালে দু-দফায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা দেন হরেকৃষ্ণ। কিন্তু তারপরে আর কোন অগ্রগতি নেই, আদালতে অভিযোগ হরেকৃষ্ণ রঞ্জিতের
আজ এজলাসে এসে অভিযোগ জানান হরেকৃষ্ণ রঞ্জিত। হাইকোর্টের ওই কর্মীকে তলব করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের ওই কর্মী। 


দীর্ঘদিন অব্যাহত তদন্ত। রাজ্যজুড়েই ছড়িয়ে দুর্নীতির জাল। সম্প্রতি জানা যায়, মধ্যশিক্ষা দফতর (West Bengal Board Of Secondary Education) থেকেই উধাও নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। ওই ফাইলেই নাকি রয়েছে দুর্নীতিতে (Corruption) প্রভাবশালী যোগের প্রমাণ। বিস্ফোরক দাবি CBI সূত্রে। 


কী ঘটেছিল?
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় উধাও গুরুত্বপূর্ণ ফাইল! নেপথ্য়ে ষড়যন্ত্র নাকি অন্য় রহস্য়? জোরাল হচ্ছে সেই জল্পনা। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্যর মতো তাবড় নেতা-মন্ত্রী ও কর্তাব্যক্তিরা ধরা পড়লেও এখনও মাথা অবধি পৌঁছোতে পারেনি কেন্দ্রীয় এজেন্সি। CBI সূত্রে দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি বিশেষ ফাইলের কথা জানা গেছে। সেখানে মূলত দুর্নীতির সঙ্গে প্রভাবশালী-যোগের তথ্য আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কীভাবে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল, তার মূলমন্ত্র ওই ফাইলের মধ্যেই রয়েছে বলে মনে করছে CBI তাই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে ওই ফাইল-সহ বিভিন্ন নথিপত্র চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু, অন্য নথি দেওয়া হলেও ওই ফাইলটি পাঠানো হয়নি। উত্তরে জানানো হয়, মধ্যশিক্ষা দফতর থেকেই ওই বিশেষ ফাইলটি উধাও হয়ে গেছে।


এখানেই দানা বাঁধছে রহস্য!! ফাইল উধাও হওয়ার পিছনে কি কোনও ষড়যন্ত্র আছে? উঠছে প্রশ্ন।সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, ২০২২-এর জুন মাসে, পর্ষদের তরফে বিধাননগর উত্তর থানায় ফাইল মিসিংয়ের অভিযোগ জানানো হয়েছিল। যখন CBI তদন্ত শুরু করে ফেলেছিল। CBI তদন্তভার নেওয়ার আগে কেন থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি? ফলে এখানেই উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন। যদিও হাল ছাড়তে নারাজ CBI।সূত্রের খবর, যেমন করেই হোক ওই ফাইল খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। ওই ফাইলের কোনও কপি আছে কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এদিন, মানিক ভট্টাচার্যর জামিনের আর্জি খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। মামলার এই পর্যায়ে জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা সম্ভব নয়। জানিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়াতেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ( Recruitment Scam )  নয়া মোড় আসে ! অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ছাড়াই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন অনেকে ! SSC শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির নয়া 'চ্যাপ্টার'-এ' বিস্মিত বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।  'CBI তদন্তে নতুন রসদ জোগাতে পারে এমন বিস্ময়কর তথ্য। সিবিআই অবস্থান জানাক হাইকোর্টে ', পর্যবেক্ষণ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে জানায়, '৬৭ জন  অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নেননি। রাখা আছে পর্ষদ অফিসেই'।