সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: বিকাশ মিশ্র মামলায় প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর। 'কয়লা পাচার কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্র বড় ব্যবসায়ী', ইচ্ছে করে হাসপাতালে পাঠিয়ে তদন্ত প্রভাবিত করতে  চেয়েছেন সুপার, মন্তব্য বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর।' বিচারপতি আরও বলেন, 'আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়া অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এই নির্দেশ আগে দেওয়া হয়েছিল আদালতের তরফে। জেলে পাঠানোর পর তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওয়ার্ডে না পাঠিয়ে জেল হাসপাতালে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। জেল সুপারের উচিত আইন মেনে চলা, যাতে বাকিরা তাকে অনুসরণ করতে পারে, সেটাই অমান্য করেছেন। জেলের প্রধানের এমন ভূমিকা দেখে আদালত চোখ বুজে থাকতে পারে না।'


বিচারপতির ভর্ৎসনার পর নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার। জেল সুপারের ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর।


অনেকদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন বিকাশ মিশ্র। পরে তিনি জেলে যান। সেই সময় কোর্টের তরফে সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে একটি নির্দিষ্ট দিনে তাকে পেশ করতে হবে আদালতে। সেই নির্দেশমতো যখনই পেশ করা হয় সেখানে সিবিআই আধিকারিকরা পৌঁছে গিয়ে গরু পাচার কাণ্ডেও গ্রেফতার করেছিলেন বিকাশকে। তার আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে নাম জড়ানোর গ্রেফতার হয়েছিলেন বিকাশ। 


গত ১৩ ডিসেম্বর আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালত বিকাশ মিশ্রকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এরপরই নাটকীয় মোড় নেয় ঘটনা।  সিবিআই সূত্রে দাবি, অসুস্থতার কারণে আসানসোল জেল থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতাল তারপর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শেষে এসএসকেএম ভর্তি করা হয় বিকাশকে। এরপরই জেল ও ৩ হাসপাতালের কাছে বিকাশের অসুস্থতা সম্পর্কে জানতে চিঠি দেয় সিবিআই। এই অসুস্থতা এবং আরও আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এবার বিচারক এমন মন্তব্য করলেন। 


সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত:
বিকাশ মিশ্রেরই দাদা বিনয় মিশ্র গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত এবং এখনও ফেরার। বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন তিনি। গত বছরেই ইডি বিকাশ মিশ্র ও বিনয় মিশ্রের একটি সংস্থার নামে কেনা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল। ইডি সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের গোপীনাথপুরে আনুমানিক ১৩ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা মূল্যের ওই সম্পত্তি বিনয় ও বিকাশের সংস্থার নামে কেনা হয়েছিল। এই মামলায় এর আগে একাধিক অভিযুক্তর ২০৪ কোটি টাকার সম্পত্তি ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে।