রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : সতীর বাঁ পায়ের ছাপ রয়েছে পাথরে। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে মধ্যে রয়েছে সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম পীঠ। জলপাইগুড়ি জেলার বোদাগঞ্জের এই মন্দির ভ্রমরীদেবী মন্দির নামে পরিচিত। '৯০-এর দশক থেকে প্রকাশ্যে আসে এই মন্দিরটি।


কথিত আছে, রাজারা জঙ্গলে শিকারে যাওয়ার সময় এই মন্দিরেই পুজো দিয়ে যেতেন। এই মন্দিরে নিত্যদিন পুজোর আয়োজন হয়। দর্শনার্থীদের ভিড়ে গমগম করে। দেবীর চরণে প্রতি শনি, রবি ও মঙ্গলবার ভোগ দেওয়া হয়। অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় ভোগ দেওয়া হয়। প্রতিবার কালীপুজোয় ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয় এখানে।


তবে, হাতির আতঙ্কে এবার এই পুজোয় কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত ৫ তারিখেও মন্দির লাগোয়া বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল থেকে একদল হাতি মন্দির চত্বরে ঢুকে পড়েছিল। সেই কারণেই এবার কালীপুজো চলাকালীন প্রচুর মানুষের ভিড় হবে। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেই কারণে রাত ১২টার মধ্যে পুজো শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বন দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।


আরও এক সতীপীঠের কথা-


বহু সাধকের সাধনার সাক্ষী । জঙ্গল ঘেরা একটি ছোট্ট টিলা। নলহাটির (Nalhati) মাঝ বরাবর ছোট্ট জঙ্গলাবৃত এই টিলারই এক প্রান্তে রয়েছেন দেবী নলাটেশ্বরী। ৫১ পীঠের অন্যতম বীরভূমের নলহাটির নলাটেশ্বরী (Birbhum Nalhati Nalateshwari Satipith)। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, এখানে সতীর গলার নলি বা কন্ঠনালী পড়েছিল। এখানে প্রতিষ্ঠিত দেবীর নাম শেফালিকা। ভৈরব হলেন যোগীশ।


সতীপীঠেরই একটি পীঠ বীরভূমের নলাটেশ্বরী মন্দির। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, এখানে সতীর নলি বা কন্ঠনালী পড়েছিল। এরপর মায়ের আদেশেই ব্রাহ্মণী নদীর তীরে ললাট পাহাড়ের নিচে দেবী নলাটেশ্বরীর মন্দির স্থাপন করা হয়।


কথিত আছে, বিষ্ণুচক্রে যে ৫১ খণ্ড হয়েছিল, তার একটি খণ্ড বীরভূম জেলার নলহাটি শহরে ব্রাহ্মণী নদীর এক কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের পূর্ব ও দক্ষিণ কোণে পড়েছিল। মা স্বপ্ন দিয়েছিলেন, এখান থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের নিবাসী সুখদেবকে। সুখদেবের নাম ছিল- রামশরন দেবশর্মা পণ্ডা। তিনি এখানে এসে গভীর জঙ্গলের মধ্যে মা-কে দেখতে পান। তখন মায়ের কোনও কিছু ছিল না। শুধুমাত্র, একটি ঝর্নার জলে ঝর্না ঝরত। সেই ঝর্নার জল নিয়ে এসে উনি মা-কে এখানে স্নান করান। তারপর প্রতিদিন তিনি এখানে গভীর জঙ্গলে মায়ের পুজো করতেন। পরে হেঁটে বাড়ি চলে যেতেন। প্রায় ৫০০ বছর আগের কথা এসব। কেউ কেউ বলেন, ২৫২ বঙ্গাব্দে ব্রহ্মচারী কামদেব স্বপ্নাদেশে কাশী থেকে এসে এই পীঠস্থানটি আবিষ্কার করেন।