সুজিত মণ্ডল, কল্যাণী : অন্যের গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু নকল করার অভিযোগে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Kalyani University) এডুকেশন বিভাগের (Education Department) ডিনের পদ থেকে সরানো হল দেবপ্রসাদ শিকদারকে। রাজ্য সরকার নিয়োগ করেছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এভাবে সরাতে পারে না। সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা দাবি করেছেন অপসারিত ডিন।


দু’জনের দু’টি গবেষণাপত্র। একটি ১৯৯৫ সালের, আরেকটি ৯৯-এর। বিষয়বস্তু এক হলেও, একজন গবেষণা করেছেন বায়োলজি নিয়ে, আরেকজন ফিজিক্স নিয়ে। আর এই দুই গবেষণাপত্রকে ঘিরেই শোরগোল পড়ে গেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। অন্যের গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু নকল করার অভিযোগে সরিয়ে দেওয়া হল বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন বিভাগের ডিনকে।


গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু নকল ?


১৯৯৫ সালের এই গবেষণাপত্রটি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন বিভাগে জমা দিয়েছিলেন স্বদেশরঞ্জন সামন্ত নামে এক গবেষক। অভিযোগ, এই গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু নকল করেই ১৯৯৯ সালে গবেষণাপত্র জমা দেন দেবপ্রসাদ শিকদার নামে আর এক গবেষক। পরবর্তীকালে যিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও শুরু করেন। ২০২১-এর ১৯ ফেব্রুয়ারি এডুকেশন বিভাগের ডিন পদে নিযুক্ত হন তিনি। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু নকল করার মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। যে অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর, তাঁকে ডিনের পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিল। 


আরও পড়ুন ; টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার প্রস্তাব ! বিস্ফোরক অভিযোগ প্রাক্তন অধ্যাপকের


এনিয়ে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক সুজয় মণ্ডল বলেন, কমিটি তদন্ত করে দেখেছে, অধ্যাপক স্বদেশরঞ্জন সামন্তর জমা দেওয়া থিসিসের সঙ্গে প্রায় ১০০ শতাংশ মিল রয়েছে অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদারের জমা দেওয়া থিসিসে। তদন্ত কমিটি রিপোর্টের ভিত্তিতে অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদারকে নতুন অর্ডার না আসা পর্যন্ত, শিক্ষা অনুষদের ডিন পদ থেকে আপাতত অপসারণ করা হয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে তাঁকে এবং এই বিষয়ে তাঁর কাছে ব্যাখ্যা এবং মন্তব্য চাওয়া হয়েছে। কর্মসমিতি বৈঠকের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতরের মুখ্যসচিবকে জানিয়ে দেওয়া হবে।


যদিও অন্যায়ভাবে তাঁকে সরানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন অধ্যাপক দেবপ্রসাদ। তিনি বলেন, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় সরাতে পারে না। কারণ রাজ্য সরকার নিয়োগ করেছে। যে পদ্ধতিতে করা হয়েছে ওই পদ্ধতিতে করা যায় না। ওটা হয় না কখনো। অনৈতিকভাবে, ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হয়েছে। অভিযোগ আমি মানছি না।


স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, শোরগোল ফেলে দিয়েছে গোটা রাজ্যে। এই প্রেক্ষাপটে একজন ডিনের বিরুদ্ধে গবেষণাপত্র নকল করার অভিযোগ ওঠায়, ফের রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় দাগ লাগল বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ।