দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টে কামদুনি মামলার শুনানি হওয়ার কথা। শুনানির পর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চাইবেন তাঁরা। 


দশ বছর ধরে চলেছে মামলা। নিম্ন আদালতের রায় পাল্টে গিয়েছে হাইকোর্টে (High Court)। কামদুনি মামলায় (Kamduni Case) হাইকোর্টের রায় নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার, ক্ষুব্ধ কামদুনি কাণ্ডের প্রতিবাদীরাও। বিচারের দাবি নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হচ্ছেন কামদুনির প্রতিবাদী ও মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকারও। কিন্তু তাতে কতটা লাভ হবে? কী বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা?


কামদুনিকাণ্ডে দোষীদের আরও কড়া শাস্তির দাবিতে লড়াই চালিয়ে যেতে চান কামদুনির প্রতিবাদী ও মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। কলেজ পড়ুয়া যে হিংস্রতা এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা সমাজকে। পথে নেমেছিলেন বহু নাগরিক-বিদ্বজন। সেই মামলায় হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তা পর্যাপ্ত নয় বলেই দাবি মৃত ছাত্রীর পরিবার, টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়ালদের। কিন্তু আইন কী বলছে? আইনজ্ঞদের প্রশ্ন, কামদুনির লড়াইয়ের দৃঢ়তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন না উঠলেও, তদন্তকারীদের সদিচ্ছা নিয়ে ইতিমধ্য়েই প্রশ্ন উঠেছে, তারা যে তথ্য় প্রমাণ হাইকোর্টে দাখিল করেছে, তার ভিত্তিতে কি সুপ্রিম কোর্ট থেকেও কোনও আশার আলো দেখা সম্ভব?


গণধর্ষণ, খুন, ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে থাকা বিকৃত একটা শরীর, হাড়হিম করা ঘটনার স্মৃতি কামদুনিকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেরিয়েছে। আর এক দশক পর ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে, ২ দোষীকে ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ( Kamduni Case )।  কামদুনি-মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করল রাজ্য। সূত্রের খবর, কামদুনি মামলায় নির্যাতিতার পরিবার যাতে সুবিচার পায়, সেজন্য় আইনজীবীদের সঙ্গে ব্য়ক্তিগতভাবে যোগাযোগ রাখছেন মুখ্য়মন্ত্রী। কামদুনির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। 


২০১৩ সালের কামদুনি গণধর্ষণ-খুনের মামলায় গত ৬ অক্টোবর রায় ঘোষণা করে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ। ওই দিনই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের কাছে মামলা সংক্রান্ত সমস্ত নথি ও হাইকোর্টের নির্দেশের কপি পাঠানো হয় স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিলের জন্য।  


এরপর কামদুনিকাণ্ডে এই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।  আর তারপর থেকেই তদন্ত নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে কামদুনি। সিআইডি আর রাজ্য সরকারের গাফিলতিকেই দায়ী করছে নিহত নির্যাতিতার পরিবার। রায় ঘোষণার রাতেই কামদুনিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখেও পড়ে সিআইডি। রায় ঘোষণার পরই সিআইডি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। এরপর রাতে মৌসুমী কয়ালের বাড়িতে গিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা বলেন সিআইডি আধিকারিকরা। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাদের সামনেই ক্ষোভ উগরে দেয় হতাশ পরিবার ও কামদুনির প্রতিবাদীরা।  ১০ বছরে কেন ১৪ বার আইনজীবী বদল হল, প্রশ্ন তুলেছে তারা। রায় ঘোষণার পর রাতে কামদুনিতে CID।১০ বছর আগে কেন তৎপরতা দেখাল না CID, প্রশ্ন কামদুনির বাসিন্দাদের।