কলকাতা: রেলবোর্ডের কথায় 'মৃত', মালগাড়ির সহকারি চালক এখনও জীবিত। শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি মালগাড়ির সহকারি চালক। হাসপাতালে ভর্তি মনু কুমার, তাহলে কীভাবে মৃত বলল রেলবোর্ড? কথা বলার মতো অবস্থায় এলে বয়ান নেওয়া হবে, দাবি রেল সূত্রে।
ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে শিয়ালদামুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। কীভাবে হল এই দুর্ঘটনা? কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির চালক দুজনকেই কি একই লাইনে এগোনোর জন্য় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল? দেওয়া হয়ে থাকলে কেন হয়েছিল? দুর্ঘটনার দায় কি ট্রেন চালক না মালগাড়ির চালকের? রাজধানী এক্সপ্রেস প্রাক্তন চালকভিবি সিংহ বলেছেন,বেশিরভাগ সময় ওটা লোকোপাইলটের উপর ফেলে দেওয়া হবে, সব যত নিজের ত্রুটিগুলো আছে চেপে দেওয়া হবে। ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে শিয়ালদামুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ফাঁসিদেওয়ার কাছে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি। ধাক্কার অভিঘাতে মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপর উঠে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পার্সেল ভ্যান।
এই অবস্থায়, দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসাবে রেলের তরফে, মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে সিগনাল না মানার অভিযোগ করা হচ্ছে। রেলবোর্ড চেয়ারপার্সন জয়া বর্মা সিনহা বলেছেন,'সিগন্যাল ছিল থামানোর জন্য। তা সত্ত্বেও ট্রেন এগিয়ে গেছে। পিছনের ট্রেনের থেমে যাওয়া উচিত ছিল।' কিন্তু, সংবাদ সংস্থা PTI রেলের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে দাবি করেছে, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে রাঙাপানি এবং আলুয়াবাড়ি অংশের স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ‘অকেজো’ ছিল।স্বয়ংক্রিয় সিগনাল বন্ধ থাকায় ওই অংশে খুবই ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল করছিল। কখনও আবার ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেওয়াও হচ্ছিল।
সোমবার সকাল ৮টা ২৭ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রাঙাপানি স্টেশন ছেড়ে এগোনোর পরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। স্বয়ংক্রিয় সিগনাল বন্ধ থাকায় খুব ধীর গতিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস চলছিল। ওই ট্রেনের জন্য ছিল বিশেষ 'কাগুজে' ছাড়পত্র। রেলের পরিভাষায় যাকে ‘পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিট’ (PLCT) বলে। রেলের সূত্রের দাবি, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ‘TA 912’ ফর্ম দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস চালাচ্ছিলেন চালক।
পড়ুন আরও খবর, অতি ভারী বর্ষণের লাল সতর্কতা উত্তরবঙ্গে, ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা..
রেলসূত্রে দাবি, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার 'TA 912' ফর্ম দিয়েছিলেন। সেইমতো কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস চালাচ্ছিলেন চালক। আবার সংবাদ সংস্থা PTI রেলের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে দাবি করেছে, রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার মালগাড়ির চালককে ‘TA 912’ দিয়েছিলেন।রাঙাপানি এবং চটেরহাট স্টেশনের মাঝে ৯টি সিগনাল রয়েছে। অর্থাৎ এই সিগনালগুলোর কোনওটি লাল থাকলেও তা পেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রেলে সূত্রের দাবি, রাঙাপানি স্টেশন ম্যানেজার হয়তো ভেবেছিলেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ওই সেকশন ছেড়ে আগের সেকশনে চলে গেছে। তাই তিনি ওই লাইনেই মালগাড়িকে যাওয়ার 'লিখিত ছাড়পত্র' দিয়েছিলেন।