অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: একবালপুরে চালু হল কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) নতুন পাম্পিং স্টেশন (Pumping Station)। তৈরি হওয়ার মাত্র ৮ মাসের মধ্যেই, আংশিকভাবে কাজ শুরু হল। অন্যদিকে উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি চত্বরে জমা জলের দুর্ভোগ মেটাতেও, ঋষিকেশ পার্কে নতুন পাম্পিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা (KMC)।


অল্প বৃষ্টিতেই উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি চত্বরে, দুর্ভোগের এই ছবি বেশ চেনা। বর্ষায় যা আরও ভয়াবহ আকার নেয়। এলাকাবাসীকে জল জমার এই দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে, এবার বড়সড় উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঋষিকেশ পার্কে তৈরি হবে পাম্পিং স্টেশন। 



বুধবার এই কথা জানাতে গিয়ে, এবিপি আনন্দে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-র একটি কথার প্রসঙ্গ স্মরণ করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, 'সুমন দে-র মুখেই শুনেছিলাম, যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু পুরসভার দায়িত্বে থাকাকালীন, গামবুট পরে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির ওখানে যেতেন জমা জলের সমস্যা খতিয়ে দেখতে।' এদিনই একবালপুরের নবাব আলি পার্কে, নতুন পাম্পিং স্টেশন আংশিকভাবে চালু হয়ে গেল। বর্ষায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াই চালু করে দেওয়া হল এটি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, মেয়র পারিষদ নিকাশি তারক সিং। পুরসভা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জার্মানি থেকে এখানে পাম্প আসতে সময় লেগেছিল।  


তা সত্ত্বেও রেকর্ড সময়ে, তৈরি হওয়ার মাত্র ৮ মাসের মধ্যেই চালু করা হল পাম্পিং স্টেশনটি। আপাতত ৭২ কিউসেক জল পাম্প করতে পারবে এটি। ব্যয় হয়েছে ৮২ কোটি টাকা। এই পাম্পিং স্টেশনেই রয়েছে কলকাতার গভীরতম সাম্প বা চৌবাচ্চা।


একদিকে একবালপুরের নবাব আলি পার্কে চালু হল পাম্পিং স্টেশন। অন্যদিকে ঋষিকেশ পার্কে পাম্পিং স্টেশন তৈরি হলে, বছর খানেকের মধ্যেই উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় জমা জলের সমস্যা মিটবে বলে আশাবাদী পুরসভা।


অন্যদিকে, মাঝ আষাঢ়ে বৃষ্টির দাপট। কলকাতা ও তার লাগোয়া হাওড়া ও দুই ২৪ পরগনায় রাতভর বৃষ্টি। টানা বৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই কলকাতার বহু জায়গায় জল জমেছে। রাত দুটো থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত, ৪ ঘণ্টায় গড়িয়ার কামডহরি এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ১১১ মিলিমিটার। বালিগঞ্জে ৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৫৯ মিলিমিটার। রাত দুটো থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ধাপায় বৃষ্টি হয়েছে ৩৬ মিলিমিটার। তপসিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে ৩৭ মিলিমিটার। উল্টোডাঙায় বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার। মোমিনপুরে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ২৪ মিলিমিটার। একই পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে মানিকতলাতেও। ঠনঠনিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে ২৩ মিলিমিটার। দত্তবাগানে বৃষ্টি হয়েছে সাড়ে ১৮ মিলিমিটার। 

কয়েক ঘণ্টা টানা বৃষ্টির জেরে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ১৫, ১৬ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তায় জল জমে যায়। এমনকি ড্রেন ছাপিয়ে নোংরা জল অনেকের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্যই এত দুর্ভোগ। অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। পুরসভাকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তৃণমূল পরিচালিত ডায়মন্ড হারবার পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, একনাগাড়ে বৃষ্টির জন্যই জল জমেছে বিভিন্ন জায়গায়। দ্রুত জল সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। 


 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন