কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: হেয়ার স্কুলের (Kolkata Hare School) প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার (Teacher Suicide)। বর্ধমানের মেমারিতে নিজের বাড়িতে মিলল ঝুলন্ত দেহ। অবসরের পর ৩ বছরেও পেনশন না পেয়ে অবসাদে ভুগছিলেন, অভিযোগ পরিবারের। ২০১৯-এ শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হন শিক্ষক সুনীলকুমার দাস। পেনশনের জন্য অনেক বার বিকাশ ভবনে গিয়েছিলেন, দাবি মৃত শিক্ষকের স্ত্রী-র।
কলকাতার হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক আত্মঘাতী!
সুনীলবাবু মেমারি (Memari News) থানার অন্তর্গত রাজবাগান এলাকার বাসিন্দা। গতকাল নিজের বাড়ি থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে শিক্ষারত্ন সম্মান পান তিনি। তার কিছুদিন পর সেপ্টেম্বরে অবসর গ্রহণ করেন। এর পর থেকে দীর্ঘ দিন ধরে শুধু হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। গত তিন বছরে পুরনো স্কুলে গিয়েছেন একাধিক বার। বিকাশ ভবনেও গিয়েছেন বার বার। পেনশন না পেয়ে অসুবিধা হচ্ছে, জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।
মৃত শিক্ষকের পরিবার আরও জানিয়েছে, দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন সুনীলবাবু। একমাত্র ছেলেও পিএইচডি সম্পূর্ণ করেছেন। শীঘ্রই শংসাপত্র পেয়ে যাবেন তিনি। পেনশনের টাকা ছাড়াই সব দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবে চলতে চলতে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তিন বছরেও পেনশন চালু না হওয়ায় বিধ্বস্ত বোধ করছিলেন। তার পরই এই ঘটনা।
আরও পড়ুন:
সুনীলবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে মেমারি থানার পুলিশ তাঁর বাড়িতে হাজির হয়। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় তারাই। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে মৃতের স্ত্রী বলেন, "পেনশন পায়নি, দুশ্চিন্তা ছিল। পেনশন ছাড়া কী করে সংসার চালাবেন, বলতেন। অনেক বার বিকাশ ভবনে গিয়েছেন। স্কুলেও গিয়েছেন। অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু হবে হবে বললেও, এখনও হয়নি।"
পেনশনের টাকা আটকে থাকাতেই আত্মঘাতী!
এক প্রতিবেশী বলেন, "বেশ কয়েক দিন ধরেই মনমরা হয় ঘুরছিলেন। তার পরই দেহ উদ্ধার। নাইলনের দড়ি দিয়ে ঝুলছিল দেহ। পেনশন নিয়ে চিন্তায় ছিলেন।" এ নিয়ে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের প্রতিক্রিয়া, "ভয়ঙ্কর এবং মর্মান্তিক ঘটনা। কেন এটা ঘটল জানি না। শিক্ষা দফতর সম্পর্কে দুর্নাম তো আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে! তোলা না দেওয়ার জন্যই পেনশন পাননি কিনা, তদন্ত হওয়া উচিত। যে পাপ হয়েছে, তার প্রায়শ্চিত্ত কী ভাবে হবে জানি না। শিক্ষা এবং সমগ্র প্রশাসনের উপর এর দায় বর্তায়। এর বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার।"