আবির দত্ত, কলকাতা: গার্ডেনরিচে (Gardenrich) ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডি হানার (ED Raid) পর চক্ষু চড়ক গাছ হয়েছে সবারই। খাটের নিচে এহেন টাকার পাহাড় দেখে কয়েক মুহূর্তের জন্য বাকরুদ্ধ হয়েছিল গোটা রাজ্য। ঠিক আর কত ? কারণ টাকা গোনার মেশিনে, শুধুই সময়ে সঙ্গে সংখ্যাটা বদলে যাচ্ছিল। কোটি কোটি টাকা শুধু বেরিয়ে আসছিল। সাদামাটা খাটের নিচ থেকে টাকা উদ্ধারের পর গার্ডেনরিচকাণ্ড সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ব্যবসায়ীর নামে-বেনামে- ১৪৭ টি অ্যাকাউন্ট ? তদন্ত সূত্রে খবর, ৫ টি ব্য়াঙ্কে ফেরার ব্যবসায়ী আমির খানের রয়েছে অজস্র অ্যাকাউন্ট !


জানা গিয়েছে, ফেডারেল, আইসিআইসিআই,ইয়েস ব্যাঙ্ক -সহ ৫ টি ব্য়াঙ্কে ফেরার ব্যবসায়ী আমির খানের অজস্র অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কীভাবে গার্ডেনরিচের ওই ব্যবসায়ী প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিল ? ইডি-র তদন্তে ইতিমধ্যেই উঠে আসছে যে, এই প্রতারক ব্যবসায়ী আমির খানের বিরুদ্ধে ফেডারেল ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক এর আগে একবার অভিযোগ করেছিলেন, প্রথমে অভিযোগ নেওয়া হয়নি, পরে আদালতের নির্দেশে অভিযোগ নেওয়া হয়। এদিকে ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সালে ফেডারেল, আইসিআইসিআই,ইয়েস ব্যাঙ্ক -সহ ৫ টি ব্য়াঙ্কগুলি থেকে একাধিকবার ওই ব্যবসায়ী টাকা তুলেছেন বলেই তথ্য উঠে এসেছে। পাশাপাশি, ই-নাগেটস ছাড়াও আরও ২ টি অ্য়াপ খুলে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিলেন বলে, ইডি-র নজরে এসেছে।


অপরদিকে, জানা গিয়েছে, গার্ডেনরিচে টাকা উদ্ধারকাণ্ডে ইডি-র নজরে আমির খানের বাবা নিসার খানের  ব্যবসা। গার্ডেনরিচে নিসার খানের বাড়ির কাছেই সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডেইতাঁর পরিবহণ সংস্থার  অফিস।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, গত কাল সকালের পর থেকে এই অফিস আর খোলা হয়নি। আরও কিছু বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। নিসার কখন অফিস আসতেন আর কখন বেরিয়ে যেতেন, এ নিয়ে ধন্দে রয়েছেন প্রতিবেশীরাও। ছেলে আমির খানকেও সময় দেখা যেত না, জানালেন স্থানীয়রা। স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিবহণ ব্যবসা নিয়ে ধন্দ ছিল প্রত্যেকের মনেই। আমিরের মোবাইল গেমিং অ্যাপ প্রতারণা থেকে আসা 'কালো' টাকা এখানে খাটত কিনা, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সব মিলিয়ে ইডি-র রেডারে রয়েছেন নিসার খানও।  


আরও পড়ুন, 'মানা হয়নি আদালতের নির্দেশ', হাইকোর্টের দ্বারস্থ অভিষেকের শ্যালিকা


প্রসঙ্গত, ২ হাজার, ৫০০, ২০০, ১০০ টাকার নোটে বান্ডিল বান্ডিল টাকার হদিশ মিলেছে। কীভাবে, কোত্থেকে এল কোটি কোটি টাকা ? এখনও রহস্য । মোবাইল গেমিং অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগে চলছে তল্লাশি চালায় ইডি। ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ৬৫ থেকে ৭০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বেআইনি লেনদেনের মামলায় একযোগে কলকাতার ৬ জায়গায় ইতিমধ্যেই  তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। গার্ডেনরিচ ছাড়াও মোমিনপুর, পার্ক স্ট্রিট, নিউটাউন-সহ ৬ জায়গায় অভিযান। সাদামাটা বাড়ির আড়ালে কোটি কোটি টাকার কারবারের পর্দাফাঁস হয়েছে।