পার্থপ্রতিম ঘোষ, সঞ্চয়ন মিত্র ও ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: ইন্টারভিউ নয়, সরাসরি দিতে হবে নিয়োগপত্র। দু’হাজার চোদ্দ সালের টেট উত্তীর্ণ (TET Agitation) চাকরিপ্রার্থীদের জমায়েত ও বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল এক্সাইড মোড়ে (Kolkata News)। পুলিশি ধরপাকড় চলাকালীন ঝরল রক্ত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের সামনে দফায় দফায় চলল বিক্ষোভ কর্মসূচি। ইন্টারভিউ নয়, সরাসরি নিয়োগপত্রের দাবিতেই অনড় থাকলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
ইন্টারভিউ নয়, সরাসরি দিতে হবে নিয়োগপত্র, দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা
বুধবার দুপুরে এমনই দৃশ্য ধরা পড়ল শহরের রাস্তায়। চাকরিপ্রার্থীকে পুলিশের কামড়, এমনকি ঘুষি মারতেও দেখা গেল। নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে গাড়ির নিচে শুয়ে পড়লেন চাকরিপ্রার্থীরা। ফুটপাতে বিক্ষোভ দেখালে চ্যাংদোলা করে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তাড়াও করা হল চাকরিপ্রার্থীদের। কার্যতই রক্তারক্তি কাণ্ড বাধল। তাতে বিক্ষোভে শামিল এক চাকরিপ্রার্থীকে বলতে শোনা যায়, "আমাদের নয় নিয়োগ দিন, নয় মৃত্যু দিন।" রক্তাক্ত অবস্থায় অন্য এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, "পুলিশে মেরেছে, পুলিশে মেরেছে... দেখুন... কী অবস্থা দেখুন আমার।" কাঁদতে কাঁদতে অন্য আর একজন বলেন, "আমাদের চাকরিটা বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আমরা আমাদের চাকরিটা ফেরত চাই।"
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, আজ যাঁদের ক্লাসরুমে থাকার কথা ছিল, কারা তাঁদের রাস্তায় নামাল! কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা অনড় থাকলেন নিজেদের দাবিতেই। ইন্টারভিউ নয়, সরাসরি দিতে হবে নিয়োগপত্র, এই দাবিতে বুধবার পথে নামেন, ২০১৪-র TET উত্তীর্ণরা।
আরও পড়ুন: TET Agitation: যাঁকে পুলিশের কামড়! তাঁকেই জামিন অযোগ্য ধারা! গ্রেফতার চাকরিপ্রার্থী
ক্যামাক স্ট্রিটে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস অভিযানের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, "কয়েকদিন আগে অভিষেক বাবুর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলাম। উনি প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। বলেছিল, দ্রুত নিয়োগ হবে। দেড় মাস হয়ে গেল, এখনও হল না। তাই আমরা আবার এসেছি।"
বুধবার দুপুর পৌনে ৩টে নাগাদ রবীন্দ্র সদন মেট্রোর সামনে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বাইরে প্রস্তুত ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। জমায়েত শুরুর সময়ই, বিক্ষোভকারীদের পাকড়াও করে প্রিজন ভ্যানে তুলতে শুরু করে, পুলিশ। সেই আবহেই আন্দোলনাকীদের কয়েক জন প্রিজন ভ্যানের নিচে শুয়ে পড়েন।
বুধবার দুপুরে ধুন্ধুমার শহরের রাস্তায়
চাকরিপ্রার্থীদের বলতে শোনা যায়, "আজকে আমরা চাকরিপ্রার্থী। ন্যায্য দাবিতে এসেছি। আমরা টাকা দিতে পারিনি বলে, চাকরি পাইনি।" এই নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের জীবনে অনিশ্চয়তা কাটেনি।