সুকান্ত দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে গাফিলতির অভিযোগ। জ্বর না কমায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়া হয়। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ দায়ের পরিবারের। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের। 


মধ্য পঞ্চাশের রোগিণীকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ। ফের কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল। শুক্রবার এখানে ভর্তি হন কুলতলির পূর্ব রাধাবল্লভপুরের বাসিন্দা মামুদা সর্দার। পরিবারির দাবি, শনিবার জ্বর না কমায় তাঁকে প্যারাসিটামল ইনফিউশন নামে একটি ওষুধ দেওয়া হয়। 


যাঁর ব্যাচ নম্বর 19PPC016। অভিযোগ, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই ওই ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসতেই পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এর পরই ওষুধ বদলে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


মেহবুব হোসেন সর্দার, রোগীর ছেলে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কুলতলির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ দায়ের করে রোগিণীর পরিবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দোষ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই রোগিণীর অবস্থা এখনও স্থিতিশীল। তবে তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়নি। 


উল্লেখ্য, ওষুধ নিয়ে বিশৃঙ্খলার ছবি আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্যে ভ্যাকসিন অপ্রতুল। এখনও আবিষ্কার হয়নি করোনার সঠিক ওষুধ। এই পরিস্থিতিতে, যে ওষুধ দিয়ে মারণ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা, সেরকম প্রায় ৩ কোটি টাকার ওষুধ ও ইঞ্জেকশন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  কারণ খুব শীঘ্রই ওষুধগুলির মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। 


হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত, মাত্র ৩৫ জন করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে সেখানে।  ফলে সব ওষুধ কাজে লাগছে না। হাসপাতাল সূত্রে দাবি, স্বাস্থ্য দফতর থেকে যে ওষুধ পাঠানো হয়েছিল, তার মধ্যে এখনও ব্যবহার হয়নি - রেমডেসিভির, টসিলিজুমাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ।  প্রকাশ্যে এসেছে একটি তালিকাও।



  • পড়ে রয়েছে রেমডেসিভির-এর ২৩৭৪টি ভায়াল। যার দাম ৯০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। 

  • পড়ে রয়েছে টসিলিজুমাব-এর ১৬৮টি ভায়াল। দাম ৩৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। 

  • ব্যবহার হয়নি কাসিরিভিমাব-এর ১৪৯টি ভায়াল। যার দাম ৮৭ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা।

  • কাজে লাগেনি মিথাইল প্রেডনিসোলোন-এর ১৪ হাজার ভায়াল। যার মূল্য ৪২ লক্ষ টাকা। 

  • অব্যবহৃত সাড়ে ৭৫ হাজার ৫৩০টি হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনের ট্যবলেট। দাম সাড়ে ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৫০ টাকা।

  • পড়ে রয়েছে ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন বি-এর ১০৩টি ভায়াল। যার দাম ২ লক্ষ ৬ হাজার টাকা।

  • কাজে লাগেনি ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ২০০ জিঙ্ক সালফেট ট্যাবলেট। যার দাম ৯ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা।