আবির দত্ত, বিশ্বজিৎ দাস  ও হংসরাজ সিংহ, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া: ৫ দিন ধরে কুড়মি আন্দোলনে (Kurmi Agitation) অবরুদ্ধ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল। প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকেও মিলল না রফাসূত্র। পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) খেমাশুলিতে জাতীয় সড়ক অবরোধের (National Highway Blockade) ১২০ ঘণ্টা পার। প্রায় ১০০ ঘণ্টা ধরে চলছে খেমাশুলি স্টেশনে রেল অবরোধ, পুরুলিয়ার কুস্তাউরেও ১২০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলছে অবরোধ। আদ্রা ডিভিশনে এখনও পর্যন্ত ১৮০টি ট্রেন বাতিল হয়েছে, চূড়ান্ত হয়রানির শিকার যাত্রীরা। দাবিপূরণ না হলে আজ থেকে আন্দোলন আরও তীব্রতর করার হুঁশিয়ারি। জোর করে অবরোধ তুলতে রাজ্যের সাহায্য চেয়ে চিঠি রেলের। রাজ্য-কেন্দ্রর ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।


রবিবার সকালের ছবি...
পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশনে চলছে রেল অবরোধ। গত কাল সন্ধেয় একটি বৈঠক শুরু হয়েছিল। মাঝরাতেও একটি বৈঠক হয়। এমনকি আজ সকালেও বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বার বার বৈঠকের পরও কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি। অবরোধকারীদের একটাই বক্তব্য, অবিলম্বে তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ করতে হবে। 


বাতিল ট্রেন...
এদিকে এই আন্দোলনের জেরে আজও বাতিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ৯৫টি দূরপাল্লার ট্রেন। এই নিয়ে গত ৫ দিনে ৪৯৬টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়েছে। তালিকায় রয়েছে হাওড়া-বারবিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস, হাওড়া-তিতলাগড় ইস্পাত এক্সপ্রেস, হাওড়া-বোকারো স্টিল সিটি এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুণে আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস। তা ছাড়াও বাতিল হাওড়া-মুম্বই মেল, পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেস, হাওড়া-টাটানগর স্টিল এক্সপ্রেস, হাওড়া-রাঁচি এক্সপ্রেস। সব মিলিয়ে তীব্র ভোগান্তি যাত্রীদের। তার উপর তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ। পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে কুড়মি আন্দোলনের জেরে লাগোয়া বাঁকুড়া জেলায় আসা-যাওয়াতেও সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ স্টেশনে এসে জানতে পারছেন রেল অবরোধের কথা। ফলে সড়ক পথে বা ঘুরপথে বেশি ভাড়া গুনে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। রেল অবরোধের জেরে সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। কেউ কেউ কাজের সূত্রে অন্যত্র যান। রেল অবরোধের জেরে বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুর, খড়গপুর, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া যেতে তাঁদের চূড়ান্ত সমস্যায় পড়ে হচ্ছে। কুড়মিদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে চরম ভোগান্তি নিয়ে টুইটে রাজ্যকে নিশানা করেছেন  শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। রেল ও  সড়ক অবরোধ চলছে। মনে হচ্ছে রাজ্য সরকারের ওপর আর আস্থা নেই। কেন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে না? এটা মুখ্যমন্ত্রীর প্ররোচনার ফল। একই সুরে রাজ্যকে আক্রমণ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও। পাল্টা কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। 


আরও পড়ুন:আলপিনের মতো ফুটছে রোদ, কেমন থাকবে কলকাতা?