সুকান্ত মুখোপাধ্য়ায়, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: অয়ন শীলের (Ayan Seal) সল্টলেকের (Saltlake) অফিসে তল্লাশি চালিয়ে খোঁজ মিলেছে দ্য় ফসিলস (The Fossisls) নামে এক কোম্পানির। রহস্য়ময় সেই সংস্থার মালিক, অয়নের ছেলে ও পুত্রবধূ। বন্ডেল রোডের একটি বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়ে খোলা হয়েছিল সংস্থার অফিস। রহস্য়ময় সেই অফিসের ঠিকানায় পৌঁছে গিয়েছিলাম আমরা। 


এই নিয়োগ দুর্নীতির তল ঠিক কোথায়? গীতিকার, গানের কথায় লিখেছিলেন, গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও... কিন্তু এই নিয়োগ দুর্নীতির তল ঠিক কোথায়?   আর কে কে জড়িত? আর কে কে যাবে জেল? মাথা কে? দুর্নীতির তদন্তে নেমে এবার ED-র হাতে এক রহস্য়জনক ফসিলস। তবে, এটা কোনও জীবাশ্ম নয়। রহস্য়ে মোড়া এক সংস্থা। যার পড়তে পড়তে জড়িয়ে রহস্য়। 


সংস্থার মালিকানা কাদের? ED-র হাতে গ্রেফতার, প্রোমোটার অয়ন শীলের সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে, যে সমস্ত নথি উদ্ধার হয়েছিল, তার মধ্য়ে পাওয়া যায় একটি সংস্থার নাম - 'দ্য় ফসিলস'। ডকুমেন্টে সংস্থার মালিকানা হিসেবে নাম রয়েছে দুজনের। 


 সেই ঠিকানায় পৌঁছয় এবিপি আনন্দ: অভিষেক শীল ও ইমন গঙ্গোপাধ্য়ায়। সূত্রের খবর, অয়ন শীলের ছেলে অভিষেক এবং অভিষেকের স্ত্রী ইমন গঙ্গোপাধ্য়ায়। এই দুজনই ফসিলস নামক এই রহস্য়ময় সংস্থা চালাত। যার ঠিকানা, বন্ডেল রোডে। সেই ঠিকানায় পৌঁছয় এবিপি আনন্দ। ৩ তলা সুদৃশ্য় বাড়ি। বাড়ির মালিক সুগতরঞ্জন দাশগুপ্ত। তাঁর দাবি, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার জন্য় এক দালাল মারফৎ ২ জন আসেন। 


বাড়ি মালিকের দাবি, দম্পতি এসে জানায়, তাঁদের মূল অফিস বলাগড়ে। কলকাতায় অফিস খুলতে চায়। তাই বাড়ি ভাড়ার প্রয়োজন। বাড়ি মালিক জানিয়েছেন, 
মাসে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাড়ির একতলাটি অফিস তৈরির জন্য় ভাড়া দেন তিনি। ১১ মাসের চুক্তি হয়। কিন্তু কোনওদিনই একতলায় কোনও অফিস তৈরি হয়নি।  


বাড়ির মালিক  সুগতরঞ্জন দাশগুপ্ত কী বলছেন? একটা যে অফিস, সেটা কোনওদিনই তৈরি হয়নি। কেউ আসত না। আমায় শুধু বলেছিল লেটার বক্স ব্য়বহার করবে। প্রায় সবসময়ই তালাবন্ধ থাকত। মাঝে মাঝে ব্য়াঙ্ক আর পেট্রোল পাম্পের চিঠি আসত। ওরা এসে নিয়ে যেত। কিন্তু পরের দিকে না আসায় আমি দিয়ে আসতাম। ২ বার গেছি সল্টলেকের অফিসে। ওখানে অনেক কর্মচারী। প্রথম প্রথম অভিষেক আসত। ক্য়াশে টাকা দিয়ে যেত। পরের দিকে তাও আসত না। ৭-৮ মাস বকেয়া টাকা।


এ তো গেল ধৃত অয়ন শীলের ছেলের নামে রহস্য়জনক কোম্পানি। সূত্রের খবর, হুগলি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অয়নের আরও অনেক সম্পত্তি। যেমন, চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে এই বহুতলের দোতলায় রয়েছে একটি অফিস। স্থানীয়দের দাবি, এই অফিসটি চালাতেন অয়ন শীল নিজে। এখানে আসা যাওয়া ছিল চাকরিপ্রাথীদের। 


আইনজীবী ও চুঁচুড়ার স্থানীয় বাসিন্দা মৃন্ময় মজুমদারের কথায়, এখানে মেনলি ডেটা এন্ট্রির কাজ হত। জালিয়াতির শুরুয়াত এখান থেকেই হয়। চাকরির দুর্নীতির ডেটা ম্য়ানুপুলেশন। অফিসটা তালাবন্ধ। অফিসের


চুঁচুড়ার যগুদাসপাড়ার ABS টাওয়ার। এরও মালিক অয়ন শীল। এই টাওয়ারের এই মাল্টি জিমের মালিকও অয়ন! কোথাও কোম্পানি...কোথাও ভুয়ো কোম্পানি!
এভাবেই কি নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হত ?