করুণাময় সিংহ, মালদা: সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি (Civic Volunteer Job) দেওয়ার নাম করে প্রতারণার খবরে চাঞ্চল্য ছড়াল মালদার (Malda) সাহাপুর এলাকায়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শাসকদলের মদতেই এই ধরনের প্রতারণা চক্রের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বলে অভিযোগে সরব বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, শাসকদল এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় না তাই গ্রেফতার হচ্ছে। 


সিভিক ভলান্টিয়ার পদে চাকরির নামে প্রতারণা


জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ার পদে ১০০ শতাংশ সুনিশ্চিত চাকরির বিজ্ঞাপন ও প্রচারপত্র বিলি করে জালিয়াতির কারবার চলছিল পুরাতন মালদার সাহাপুর এলাকায়। গত ৬ বছর ধরে পুলিশ প্রশাসনের দফতরের থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চলছিল এই কারবার। ১০০ শতাংশ চাকরি পাওয়া যাবে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এই বেসরকারি সংস্থা। অবশেষে রাজ্য পুলিশ দফতরের সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তা নজরে আসে জেলার পুলিশ কর্তাদের। শুরু হয় তদন্ত। তদন্ত চলাকালীন যা দেখতে পান পুলিশকর্তারা, তাতে তাঁদের চোখ কপালে ওঠেয পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে যে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রাজ্য পুলিশের দফতরে সিভিক ভলান্টিয়ার পদে নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করা হয়। তারইমাঝে প্রকাশ্যে আসে একটি ভয়েস রেকর্ডিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ভয়েস রেকর্ডিংয়ে এমন বিজ্ঞাপন সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে মালদা জেলার পুলিশ প্রশাসন। দ্রুত অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় এক বেসরকারি সংস্থার মালিককে। এই কারবারের এক মূলচক্রী সুমন গুপ্তকে গ্রেফতার করার পরই তাকে জেরা করে এই ঘটনায় জড়িয়ে থাকা অন্যান্যদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সারা রাজ্যেই এই প্রতারণা চক্র ছড়িয়ে রয়েছএ বলে অনুমান পুলিশের।


আরও পড়ুন - Malda Weather Forecast: আজ মূলত আংশিক মেঘলা আকাশ, কেমন থাকবে মালদার আজকের আবহাওয়া?


আরও জানা যাচ্ছে, কেবলমাত্র মালদা জেলাতেই সিভিক ভলান্টিয়ার পদে নিয়োদের ক্ষেত্রে এই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি ওই প্রতারণা চক্রের পক্ষ থেকে। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে গোটা রাজ্যের নিয়োগের কথা। তদন্তকারী পুলিশকর্মীদের অনুমান, এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। তাদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন যে, জেরায় ধৃত সুমন গুপ্ত জানিয়েছে যে সে নির্দোষ। শিলিগুড়ির বাসিন্দা জয়ন্ত প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সে এই তথ্য পেয়েছিল।


তদন্তকারী পুলিশকর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁদের অনুমান বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণের আড়ালেই চলত এই কারবার। এই ঘটনার সামনে আসতেই শাসক দলকে বিঁধেছে বিজেপি। দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুরি জানান, শাসকদলের মধ্যেই এই ধরনের ভুয়া সংস্থা গজিয়ে উঠছে। কেবলমাত্র ওই এলাকার নয় জেলা জুড়ে এই ধরনের প্রতারণা চক্রের ফাঁদ পাতা হয়েছে।


যদিও বিজেপির অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান, স্বচ্ছ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। সক্রিয় রাজ্যের পুলিশ। তাই প্রতারণা চক্রটি ধরা পড়ে এবং দোষী গ্রেফতারও হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরনের ঘটনাকে কখনোই প্রশ্রয় দেয় না। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।