করুণাময় সিংহ, মালদা: টানা দুই ঘন্টা বৃষ্টির জেরে চরম ভোগান্তি রোগী ও পরিবারের। প্রবল বর্ষণে জল জমল শেষ অবধি জেলার হাসপাতালের অন্দরেও। জলমগ্ন (Flood) মালদা মেডিকেল কলেজ (Malda Medical College) হাসপাতালের একাধিক ওয়ার্ড। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শহরের একাধিক এলাকাও।


সোমবার দুপুর থেকে টানা বৃষ্টির জেরে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে জল ঢুকে যায়। জরুরী বিভাগের সামনে হাঁটু জলে পরিণত হয়। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় রোগী এবং আত্মীয়দের। জরুরী বিভাগ থেকে রোগীদের ভর্তি করতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে কার্যত সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় রোগীর আত্মীয়দের। এই নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রোগীর আত্মীয়রা। অন্যদিকে মালদহের ইংলিশ বাজার পৌরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ৪ নম্বর ওয়ার্ড সহ একাধিক ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। হাসপাতাল থেকে দ্রুত জল বের করে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রিন্সিপাল।


প্রসঙ্গত, জল হাসপাতালের ভিতরে জমলে শুধুই যাতায়াতের অসুবিধা নয়, রয়েছে অন্য আতঙ্ক।  আর তা হল মূলত ডেঙ্গির আতঙ্ক। কারণ পরিষ্কার জমা জলেই জমায় ডেঙ্গি বহনকারী মশার লার্ভা। গত বছর এনআরএস হাসপাতালে জমা জলে ছড়িয়েছিল ডেঙ্গির আতঙ্ক। চলতি বছরে উত্তর ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, গত এক সপ্তাহে গোটা জেলায় গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চল মিলিয়ে হাজারেরও বেশি বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। মোট সংখ্যাটা ১৩০৫ জন। আর এই বছর হিসেব করলে, এখনও পর্যন্ত গোটা জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৫২৫৮ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে শহরাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১০৩। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে ২১৫৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন।


আরও পড়ুন, 'মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ যাচ্ছেন, আমি তাঁকে টেনশন দিতে চাই না', মন্তব্য রাজ্যপালের 


অপরদিকে, অগাস্ট মাসে একদিনের বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালেও দেখা গিয়েছিল এই ছবি।  হাসপাতালের ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ছিল জল। জল ঠেলে ঠেলে রোগী দেখেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে রোগীকে দেখতে এসে সমস্যায় পড়েন আত্মীয়-পরিজনেরাও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। যদিও ঘাটালে জল জমার ছবি প্রথমবার নয়। ফি বছর বন্যায় ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। ঘর বাড়ি থেকে জমির ফসল, সব ভাসিয়ে নিয়ে যায় এই বন্যা। এই সঙ্কটমুক্তির উপায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন। এই নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য মধ্য়েও কম জলঘোলা হয়নি। তবে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ঘাটাল।