কলকাতা: তৃণমূল নেতৃত্বের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। সম্পত্তি বৃদ্ধি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দিকেও নিশানা করছেন বিরোধীরা। যা নিয়ে সোমবার সরব হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার টিমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় বক্তব্য রাখেন মমতা। সেখানেই এই বিষয়ে বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আজ একজন বলছেন আমার নামেই কেস হয়েছে। সম্পত্তি বৃদ্ধির (Asset Case) কেস। আমার সম্পত্তি, এখানে কেন হবে আন্তর্জাতিক কোর্টে হবে। এখানে তো বিজেপি যা শিখিয়ে দেবে, তাই হবে।' তিনি আরও বলেন, 'এমপি হিসেবে ১২ বছর একটানা ১ লক্ষ টাকা পেনশন পেতাম, আমি নিই না। একটু যোগ করে দেখবেন। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেব মাসে ৩-সাড়ে তিন লক্ষ টাকা পেতাম। এক পয়সাও নিইনি। বাইরেও চা-টা পয়সা দিয়ে খাই। সরকারি গাড়িতে চড়াও কম হয়, বিপদে না পড়লে।' সাংসদ বা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি বেতন নেন না। তিনি বই লেখেন, গান লেখেন সেটাই তাঁর আয়ের মূল উৎস। একথা আগেও বলেছেন তিনি। এদিনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েতে এক কথা। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কেন বই বিক্রি করব? সেটাও তাঁদের জ্বালা। শুভা দা কেন আঁকা বিক্রি করবে, সেটাই তাঁদের জ্বালা। আমি যা বই লিখি, লোকে সেটা পড়ে, অনেক তথ্য পায়। প্রয়োজন বলে মনে করে। বাজারে সার্ভে কর, বই মেলায় বেস্ট সেলার কার বই? আমি তো শুধু একদিন যাই, আমি তো নিজে বিক্রিও করি না। ওই দিয়েই আমার চলে।' এদিন মমতা বলেন, '১ হাজার পাতার বই, একটু বসে লিখুন না। নিজে নিজে ১২৫টা বই লিখুন। এত কাজের মধ্যেও।'
পুরনো স্মৃতিচারণ:
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুরনো একটি ঘটনার প্রসঙ্গও টেনে আনেন মমতা। তিনি বলেন, '১৯৯২ সালে আমতার কান্দুয়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে ১২-১৪ জনের হাত কেটে দেওয়া হয়েছিল। তখন বই বিক্রির টাকা থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা করে পরিবারগুলিকে দিয়ে এসেছিলাম। তার জন্য ৩০ হাজার টাকা আয়কর দিতে হয়েছে।'
সমাজসেবা করতেই রাজনীতিতে:
এদিন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) বলেন, 'আমি রাজনীতিতে এসেছি সমাজসেবা করব বলে। তোমরা প্রতিদিন বস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে কালি ছেটানোর চেষ্টা কর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজসেবা করতে এসেছে মাথা উঁচু আদর্শ নিয়ে, দর্শন নিয়ে।'
হাইকোর্টে মামলা:
মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগে হাইকোর্টে (High Court) মামলা হয়েছে এদিন। একাধিক সরকারি সম্পত্তি বাজারদরের চেয়ে কম টাকায় কেনার অভিযোগ হয়েছে। ২০১১-য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে। মামলাকারীর অভিযোগ, অস্বাভাবিক হারে মমতার পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের নামে বহু সম্পত্তির হদিশ রয়েছে। সবগুলি কেনা হয়েছে ২০১৩ সালের পর। সেই বছরই ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে, অভিযোগ মামলাকারীর। সিবিআই-ইডি-আয়কর দফতর দিয়ে তদন্তের দাবি করে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'ইডি-সিবিআই-কে দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে লুঠ', তৃণমূলের সমাবেশে গর্জে উঠলেন মমতা